কয়েকশ বছর আগে ষোড়শ শতাব্দীর শেষভাগে রাজশাহীর তাহেরপুর অঞ্চলের রাজবাড়িতে দুর্গাপূজার আয়োজন হয়েছিল। সেখান থেকেই বলা যায় সর্বজনীন দুর্গোৎসব পালনের সূত্রপাত। তাহেরপুরের রাজা কংস নারায়ণ রায় এই দুর্গোৎসবের আয়োজন করেছিলেন তার প্রজাদের নিয়ে। সেই প্রজাদের ভেতর ধনী-দরিদ্র, ব্রাহ্মণ-শূদ্র সকলেই ছিলেন। পূজার কটা দিন তিন বেলা হাজার হাজার প্রজা ও দর্শনার্থী রাজার বাড়িতে অন্নসহ সকল প্রকার প্রসাদ গ্রহণ করেছেন পেটপুরে। গান-বাজনা, আনন্দ-ফূর্তিসহ সর্বজনীন সেই পূজার আয়োজনে রাজকোষ থেকে খরচ হয়েছিল শোনা যায় সাড়ে আট লক্ষ টাকা।
শত শত বছর আগে বঙ্গদেশের গ্রাম অঞ্চলের দুর্গোৎসব পালনে সাড়ে আট লক্ষ টাকা খরচ শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও ইতিহাসবিদরা তাই বলেন। রাজা কংস নারায়ণ রায়ের হাতে শুরু হওয়া সর্বোত্তম এই আনন্দোৎসব কালে কালে সকলের মিলিত প্রাণের সর্বশ্রেষ্ঠ এক ঐতিহ্যিক সংস্কৃতির রূপ পেয়েছে সারা বঙ্গে। আর সেই সংস্কৃতির পবিত্র ধারায় আজ অবগাহন করি আমরা সবাই। ধর্ম-বর্ণ-গোত্র, ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে।