দম বন্ধ করা এক দুর্যোগের মধ্য দিয়ে আমাদের প্রায় পৌনে দুই বছর কেটে গেল। বৈশ্বিক মহামারি কভিডের রক্তচক্ষু থমকে দিয়েছিল আমাদের জীবন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষা অঞ্চল। ইতিহাসে এই প্রথম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিনের জন্য টানা বন্ধ হয়ে যায়। ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করায় তবু অনলাইন ব্যবস্থাপনায় কিছুটা ক্লাস পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু অনলাইন ভার্সন সরাসরি ক্লাসের বিকল্প হতে পারে না। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে দুর্যোগটা একটু ভিন্ন। বিজ্ঞানশিক্ষা ভার্চুয়াল মাধ্যমে কতটুকুই বা সামাল দেওয়া যায়! ল্যাবনির্ভর জ্ঞানচর্চার বিকল্প তো আর ভার্চুয়াল মাধ্যম হতে পারেনি। সুতরাং ভীষণ একটি অস্বস্তি আর অশান্তি নিয়ে চলতে হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। এ অঞ্চলে সংকট আরো আছে। আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্র-ছাত্রীরা দেশের নানা অঞ্চল থেকে আসেন। তাঁদের অনেকের পরিবার তেমন সচ্ছল নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে খরচ চালানোর জন্য টিউশনি করতে হয়। এমন কেউ কেউ থাকেন যাঁরা পড়ার খরচ চালিয়েও চেষ্টা করেন বাড়িতে কিছু অর্থ পাঠাতে। দীর্ঘ সময় পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ও হল খালি করে দেওয়ার কারণে লেখাপড়ার সংকটের পাশাপাশি টিউশনিও হারাতে হয়। শহরে কোথাও মেস করে থেকে সংকট মোকাবেলা করার চেষ্টা করেছেন কেউ কেউ। অনেকে তা-ও পারেননি। গ্রামে ফিরে পারিবারিক সংকট বাড়িয়েছেন। শেষ পর্বের শিক্ষার্থীদের সংকট আরো বেশি। তাঁরা হলে থেকে পাশাপাশি চাকরির বাজারে যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুতি নেন। সেখানেও দারুণ ছন্দঃপতন ঘটিয়েছে কভিড। এসব নানা কারণে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবিতে অসহিষ্ণু হয়ে পড়ছিলেন শিক্ষার্থীরা।