সেদিন রোববার ১৯৮১, ১৭ মে রাজপথে নেমেছিল মানুষের ঢল। পথের দুই ধারে মানুষের মিছিল, পথে ট্রাক, গাড়ি, হোন্ডার সারিবদ্ধ শোভাযাত্রা। পথের মানুষ আগেই জানে, শেখ হাসিনা দীর্ঘদিন পর ঢাকায় আসছেন। বলাবলি চলছিল, ভালোই হয়েছে, রোববার অবসরের দিন, সময়টাও ভালো, বিকেলে শেরেবাংলার জনসভায় যাওয়া যাবে। রিকশাযাত্রীদের কথোপকথনে রিকশাওয়ালাও যোগ দেন, ‘দেইখ্যা আসেন কুর্মিটোলা এয়ারপোর্ট, শেখের বেটির লাগি কাতারে কাতারে মানুষ জমছে সকাল থাইক্যা। শেখ মুজিবুর যেই দিন ফিরছিল যুদ্ধের পর, এমুন মানুষ সেই দিনও হয় নাই।’
সত্যি তাই। কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে পথে দেখেছি, দুই ধারের বাড়ির কার্নিশে, ছাদে, দোকানে, ফুটপাতে মানুষ নির্নিমেষ চেয়ে ছিল ট্রাকগাড়ির শোভাযাত্রার দিকে। বিমানবন্দর এত দূর শহরাঞ্চল থেকে যে মানুষ ট্রাকগাড়ির শরণাপন্ন না হয়ে পারেনি। পথের মোড়ে মোড়ে জনতার স্বতঃস্ফূর্ত আহাজারি, ‘কী দ্যাখতে আইল শেখের মাইয়া, মা নাই, বাপ নাই, ভাইও নাই। আহারে, ক্যামুনে জানি জাগব ওর পরানে।’ কেঁদেছেন অনেকেই। অনেকের চোখে আগুনের হলকা, কণ্ঠে স্লোগানের মর্মবিদারি ভাষা।