আফগানিস্তানে তালেবান অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন করার ঘোষণা দিলেও কাবুল দখলের কয়েক সপ্তাহ পর তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করেছে। তালেবান নেতা মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দকে করা হয়েছে এই সরকারের প্রধান। হাক্কানি নেটওয়ার্কের কয়েক নেতাকেও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থান দেওয়া হয়েছে।
যদিও তালেবান বলেছে এই সরকার সাময়িক, কিন্তু কোনো নির্দিষ্ট মেয়াদ স্পষ্ট করেনি। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সেখানে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারাও নতুন কথা শুনিয়েছিল। এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহায়তামূলক দৃষ্টিভঙ্গি তাদের জন্য যা এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ তা তারা কাজে লাগাতে চেয়েছে বলে আপাতদৃষ্টিতে আমার মনে হয়। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কতদিনের জন্য কিংবা এর পরবর্তী ধাপে তারা কী করতে চায় বা হবে- এসব প্রশ্নই আপাতত জবাবহীন। অর্থাৎ সেখানে সামগ্রিক পরিস্থিতি পড়ে গেছে অনিশ্চয়তার মধ্যে। তবে তাদের এখন যা প্রয়োজন ছিল তা তারা করতে পেরেছে বলেও মনে হয় না। তারা যদি তাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য পরিস্কার না করতে পারে, তাহলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে। এখন তারা যদি বলে, যেহেতু কোনো সরকার নেই, তাই না থাকার চেয়ে একটা সরকার থাকা ভালো- এই দৃষ্টিকোণ থেকে তা করা হয়েছে তাতেও অন্য প্রশ্ন সামনে আসবে। তবে তারা এও বলেছে, যেহেতু পরিবর্তনটা দ্রুত হয়েছে, সেহেতু যাদের সঙ্গে তাদের আলাপ-আলোচনা চলছিল, তা তারা তা শেষ করতে পারেনি।
তাদের এই বক্তব্যের যুক্তি থাকতে পারে। যদি তা থাকেও তাহলেও তাদের পরিস্কার করতে হবে নবগঠিত সরকারের স্থায়িত্ব এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের প্রক্রিয়াইবা কী হবে। এসব কিছুর একটা ধারণা যদি তারা দিতে পারে তাহলে মনে করি, তালেবানের যেসব বক্তব্য ছিল তাতে মানুষ আস্থা ফিরে পেতে পারে। যদি তা না হয়, তাহলে আস্থার সংকট আরও বাড়বে। বর্তমান আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের সমস্যা তো আছেই, তাছাড়াও আফগান জনগণের যে মানবিক সমস্যা এর পাশাপাশি অর্থনৈতিকসহ যে চ্যালেঞ্জগুলো সামনে আসছে, এসব কিছুর সমাধান খুবই কঠিন হয়ে পড়বে। এ জন্য তাদের সবাইকেই ভুগতে হবে।