পাকিস্তান আমল থেকে শিল্প বলতে আমরা প্রধানত ভারী শিল্পকেই বুঝেছি এবং সে সময়ে পশ্চিমাদের সঙ্গে বহু দেন-দরবার করে ছিটেফোঁটা কয়েকটি শিল্প এই অঞ্চলে স্থাপন করতে সক্ষমও হয়েছি। এগুলোর অধিকাংশই এখন রুগ্ণ ও লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়ে পড়েছে। ‘লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং’ বা হালকা প্রকৌশল শিল্পের গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিকতা তখন আমাদের তেমন একটা মনে আসেনি, অথবা আমদানিকারকদের স্বার্থে স্বেচ্ছায় সেটা ভুলে গেছি। ফলে এই সব কলকারখানার খুচরা যন্ত্রাংশ ও মেরামতের জন্য চীন ও জাপানের ওপর নির্ভরতা ছিল প্রায় শতভাগ। শুধু তাই না, ব্লেড, সুচ, স্ট্যাপলার ও তার পিন, আলপিনের মতো ছোটখাটো শিল্পজাত পণ্য পর্যন্ত আমদানি হতো। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমদানিকারক ও বৈদেশিক মুদ্রার স্বল্পতায় পণ্য আমদানি ব্যাহত হয়। কিন্তু কলকারখানার মেরামত ও খুচরা যন্ত্রাংশের সরবরাহ থেমে থাকেনি; উর্বর উদ্ভাবনী শক্তির অধিকারী বাঙালি নিজেরাই জোড়াতালি দিয়ে তখন নষ্ট হয়ে যাওয়া অনেক যন্ত্রাংশ তৈরি করে অচল মেশিন সচল করেছে; জিঞ্জিরা-ধোলাইখাল এক্ষেত্রে পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। এখনো এই উদ্ভাবনী ক্ষমতার পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে।