প্রকৃতির জন্য প্রাণ নয়, প্রাণ ও প্রাণীর জন্যই প্রকৃতি। এই প্রকৃতির সঙ্গে প্রাণের মহামিলনই পরিবেশ। মাটি, পানি, বৃক্ষ, আলো-বাতাস নিয়ে ভূমণ্ডলের প্রাকৃতিক পরিবেশ। প্রকৃতির সব সুযোগ বিনা মূল্যে গ্রহণ করে পৃথিবীর প্রাণিকুল। পরিবেশের নদীনালা, গাছপালা, পাহাড়-পর্বত, বনবাদাড়, পশু-পাখি, কীটপতঙ্গের যে বাঁধন তা নিয়ন্ত্রণ করার দক্ষতা রাখে, একমাত্র মানবকুল। প্রকৃতি পরিবেশের সব ইতিবাচক ফলাফল যেমন মনুষ্য সমাজ ভোগ করে, তেমনি প্রকৃতি-পরিবেশ রক্ষণাবেক্ষণ বা ধ্বংস করার জন্য এই মনুষ্য সমাজই দায়ী। প্রকৃতির সবচেয়ে বড় উপাদান মাটি। মাটিকেই কেন্দ্র করে পৃথিবীর সবকিছুরই সৃষ্টি। পৃথিবীর ভূভাগের মাটি সব প্রাণের গর্ভধারিণী।
ফুল-ফসল, খাবারদাবার, ফল-ফলাদি, জন্মমৃত্যু সবকিছুই মাটিকে ঘিরে। ‘মা-মাটি-মানুষ’ তিনটি শব্দই পারস্পরিক এবং প্রকৃতি ও পরিবেশ-সম্পর্কিত। শ্রেষ্ঠ মানুষ হওয়ার বড় মন্ত্র প্রকৃতি-পরিবেশ এবং ধরিত্রী রক্ষা। এ ব্যাপারে আজ থেকে ১৫০ বছর আগে, পরিবেশবিজ্ঞানী ফ্রেডিবিক এঙ্গেলাস তার ‘ডায়ালেস্ট্রিক্স অব ন্যাচার’ গ্রন্থে বলে গেছেন, ‘বৃক্ষ কর্তন, নদীর গতিধারার নির্মম ধ্বংসলীলায় প্রকৃতি তার প্রতিশোধ নেবে। আমরা যদি নির্দয় বিজেতা, বহিরাগত কোনো আক্রমণকারী না হয়ে, প্রকৃতির অনুগত প্রজা হই, তাহলে যে কেবল প্রকৃতি আমাদের আশ্রয়ই দেবে তা নয়, আমাদের রক্ষাকর্তাও হবে। এজন্য প্রয়োজন, প্রকৃতিকে তার মতো করে চলতে দেওয়া। অর্থাত্ প্রকৃতির আইন মেনে চলা।’