‘আমার নাম তুলু, ভালো নাম জাকির। চিনতি পারিচেন?’
না। চিনতে পারিনি। বয়সে আমার চেয়ে একটু বড়ই হবেন হয়তো; কিন্তু চেহারায় তা ধরা পড়ছে না। চোখেমুখে কোনো অসহায়ত্ব নেই। ভেবেছিল, যেমন ভাবনা একটু নাগরিক ভদ্দরলোকি মনে কোনো কারণ ছাড়াই খাবি খায়। লোকটা নিশ্চয়ই সাহায্যপ্রার্থী! কিন্তু চিনিনি যে, তা তো সরাসরি বলাও যায় না; বরং চোখেমুখে সংশয় ঝুলিয়ে রাখা। যেন চিনেছি আর চিনিনির মাঝখানে একটা ভাব নেওয়া। কপটতার চূড়ান্ত আরকি। সরাসরি বলার মুরোদ নেই, তাই ওই চোখের সংশয়। আর সাহায্যপ্রার্থী মনে হওয়ার কারণ, লোকটির ডান হাতটা কনুইয়ের পরে আর নেই। এই লোকটাই আমাদের বাসের হেলপার। বাসটা মিনিবাসের চেয়ে বড়। চলে বাগেরহাট থেকে পিরোজপুর। এখন সাইনবোর্ড নামের জায়গায় মিনিট পনেরোর বিরতি। বলছে পনেরো মিনিট, আধঘণ্টাও হতে পারে। এই বিরতিটাও বিরক্তিকর। কারণ, বাসওয়ালারা মোরেলগঞ্জ থেকে আসা বাসটির অপেক্ষায় আছে। সেই যাত্রীদের যাঁরা পিরোজপুর যাবেন, তাঁদের না নিয়ে এ বাস ছাড়বে না।