সরকার স্বীকার না করলেও করোনা মহামারির প্রভাবে দরিদ্ররা যে দরিদ্রতর হচ্ছে- তার আরেকটি প্রমাণ আমরা দেখতে পেলাম স্কুল বন্ধ থাকায় পরিবারের খাবার জোগাতে ক্লাস থ্রিতে পড়া ১২ বছরের শান্তা, লেখাপড়া ছেড়ে ১৪ বছরের মুন্নার শ্রম বিক্রি করতে গিয়ে হাসেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ কোম্পানির আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়ার নির্মম ঘটনায়। এটা সেই কারখানা, যার ভবন নির্মাণের অনুমতি দিয়েছিল ইউনিয়ন পরিষদ। আমাদের জানা নেই ভবনের নকশা, সুরক্ষা ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয় নিশ্চিত করার সক্ষমতা ইউনিয়ন পরিষদের আছে কিনা। কারখানা ভবনের কোথায় দাহ্য পদার্থ থাকবে, কোথায় থাকবে রাসায়নিক; লিফটের মান কেমন হবে, সিঁড়িগুলো কতখানি প্রশস্ত, নিরাপদ ও সহজগম্য হবে ইত্যাদি বিবেচনা করে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর ছাড়পত্র দিলে তবেই একটি ভবনে কারখানা প্রতিষ্ঠা করা যায়। ভবনের সামনে ৩০ ফুট প্রশস্ততা না থাকলে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর কারখানা প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দিতে পারে না। অথচ, রূপগঞ্জের এই কারখানার সামনের রাস্তা মাত্র ১০ ফুট প্রশস্ত। জানা যায়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর হাসেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ কোম্পানির কারখানায় শিশু শ্রমিক নিয়োগ করার কারণ দর্শাতে বলেছিল। কোম্পানির মালিক পাত্তা দেয়নি। ফলে, স্থাপত্য বিভাগ, গণপূর্ত বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে শুরু করে ডজনখানেক প্রতিষ্ঠানের নাকের ডগায় হাজার হাজার ভবন ও কারখানা মাথা উঁচু করে সহস্র মানুষের মৃত্যুঝুঁকি সৃষ্টির বড়াই করতে পারে প্রকাশ্যে।