চাটগাঁর মানুষকে 'সিআরবি' শব্দটি কিংবা এই নামের জায়গাটাকে নতুন করে চেনানোর কিছুু নেই। অন্যান্য অঞ্চলের পাঠকদের দুটো কথা বলে নিতে চাই। সিআরবি শব্দটি হচ্ছে ইংরেজি সেন্ট্রাল রেলওয়ে বোর্ড-এর সংক্ষিপ্ত রূপ, যেটি ব্রিটিশ আমলের তৎকালীন আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের সদর দপ্তর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল দেড়শ বছর আগে, ১৮৭২ সালে। অপূর্ব স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন এই সুবিশাল লালরঙা নান্দনিক ভবনটি বর্তমানে দেশের পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপকের দপ্তর এবং সংলগ্ন সবুজ পাহাড় ও প্রাচীন বৃক্ষশোভিত এলাকাটি মূলত রেলওয়ের পদস্থ কর্মকর্তাদের আবাসস্থল। মূল ভবনটি ছাড়াও এখানে এমন আরও বেশ কয়েকটি স্থাপনা রয়েছে, যেগুলো তাদের ব্যতিক্রমী নকশা, প্রাচীনত্ব এবং ঐতিহাসিক কারণে নগরের গৌরবময় ঐতিহ্যের অংশ। কথিত আছে, সূর্য সেনের নেতৃত্বে সংঘটিত চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহের সময় নির্জন এই অঞ্চলটি ছিল বিপ্লবীদের অন্যতম লক্ষ্যবস্তু। মুক্তিযুদ্ধের সময় এখানে পাকিস্তানি হানাদারদের হাতে রেলওয়ের অনেক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন, যাদের নামের দীর্ঘ তালিকাটি মূল ভবনের প্রবেশপথেই স্থাপিত। এ ছাড়া যুদ্ধের একেবারে শেষ পর্বে মিত্রবাহিনীর বিমান হামলার স্মৃতিও বহন করছে এ অঞ্চল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই কোনো এক বিকেলে আমরা কিশোররা সেখানে যুদ্ধের সেই বিপুল ধ্বংসযজ্ঞ ও অবিস্ম্ফোরিত বিপুলাকৃতি বোমা দর্শনের জন্য ভিড় করেছিলাম।