নার্গিস আপা আমার বাড়িতে কাজ করেন বছর তিনেক ধরে। দুই মেয়ে আর অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে তার সংসার। বড় মেয়েও একটি বাড়িতে গৃহকর্ত্রী হিসেবে কাজ করে। ছোট মেয়েটি পড়ালেখা করে তৃতীয় শ্রেণিতে। নার্গিসের ঘাড়ে সংসারের সব দায়িত্ব। তার বড় মেয়ের সঙ্গে দেখা হলো সেদিন। মায়ের সঙ্গে এসেছিল, নাম সোমা। সোমা বিয়ে করতে চায়, কিন্তু তার মা এখন বিয়ে দিতে চান না। আমি আকাশ থেকে পড়লাম! সোমাকে জিজ্ঞেস করতেই সে বলে, 'ছোটবেলা থেকে কাম করতেছি। জীবনের অর্ধেক শ্যাষ হইয়া গ্যাছে কাম করতে করতে আর টেনশনে। এখন বিয়ে না করলে স্বামীর সংসার আর কবে করমু?' সোমার বয়স ১৬ বা কিছু কম। তার ধারণা, সংসারের ঘানি না টানতে পারা মা তার আয়ের ওপর নির্ভরশীল, তাই তাকে বিয়ে দিতে চান না। নার্গিস বলেন, ছোটবেলায় বিয়ে হওয়ায় তিনি পৃথিবীর যে কঠিন রূপ দেখেছেন, তা মেয়েদের দেখাতে চান না বলেই ১৮ বছরের আগে বিয়েতে তার মত নেই। অথচ আমরা যারা বাল্যবিয়ে নিয়ে কথা বলি, তারা ভেবেই বসি, মা-বাবাই কেবল বাল্যবিয়ে দেন। অথবা দারিদ্র্যের কারণে কন্যাশিশুর বিয়ে দিতে বাধ্য হয় পরিবার। দুটিই সত্য।