১৩ জুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান 'বন্ধ থাকবে' না লিখে 'খুলবে' লিখুন। তাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের আন্তরিক সদিচ্ছা আছে মনে হতে পারে। তবে ইচ্ছার বাস্তবায়ন বারবার সম্ভব না হওয়ায় এটা স্পষ্ট- প্রেক্ষাপট বিবেচনায় শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার যথাযথ পরিকল্পনা যেমন নেই, তেমনি নেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার সমন্বয়। করোনাবিষয়ক জাতীয় পরামর্শ কমিটি নিশ্চয় বেছে বেছে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিকসহ অন্যান্য খাত চলমান রেখে কেবল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার পরামর্শ দিচ্ছে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কারণে ছাত্রছাত্রীদের সম্পূর্ণ ঘরে আটকে রাখা যে সম্ভব হচ্ছে না, এর প্রমাণ আমরা পাই কিশোর গ্যাংগুলোর অপকাণ্ড দেখে, টিকটকের মাধ্যমে নারী পাচারের অবিশ্বাস্য গল্প জেনে। অন্যদিকে, বাড়িতে বাড়িতে বন্দি থাকা শিশুরা যেভাবে অনলাইন গেমে আসক্ত হয়ে পড়েছে, তা অভিভাবকদের অসহনীয় দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। করোনাকালে কাজ ও আয় হারানো মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত কোটি অভিভাবক কঠিন চাপ সামাল দিচ্ছেন। খোলা হবে হবে করেও বারবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা শিক্ষার্থীদেরও হতাশ তো করে। তদুপরি অভিভাবকরা জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে যেহেতু ঘরে বসে থাকতে পারছেন না, বাইরে যাচ্ছেন এবং আবার ঘরেই ফিরছেন, সন্তানদের সংস্পর্শে যাচ্ছেন। যেহেতু সংস্পর্শ করোনাভাইরাস বিস্তারের সবচেয়ে বিপজ্জনক মাধ্যম হিসেবে চিহ্নিত, কেবল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করার চিন্তা অনেকাংশেই সঠিক নয়। এ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কারণে করোনা সংক্রমণ বাড়লে অভিভাবকরা সরকারকে দায়ী করবে- এ কারণে সরকার বারবার ঘোষণা দিয়েও বন্ধের মেয়াদ বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে।