দোটানায় মেয়র আরিফ

মানবজমিন প্রকাশিত: ১১ জুন ২০২১, ০০:০০

সিলেটে ঝুঁকিপূর্ণ ৬ মার্কেট নিয়ে দোটানায় মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। ঘন ঘন ভূমিকম্প হওয়ায় ১০ দিনের জন্য বন্ধ করে দিয়েছিলেন এসব মার্কেট। ১০ দিনের মাথায় ফের সিলেটে ভূমিকম্পের ঝাঁকুনি দেয়ায় এই মার্কেটগুলোকে খোলার অনুমতি দিতে পারছেন না। আর মার্কেট কর্তৃপক্ষওঝুঁকিপূর্ণ ভবন নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারছেন না। এ অবস্থায় ক্ষতির মুখোমুখি কয়েক হাজার ব্যবসায়ী। ১০ দিন ধরে মার্কেট বন্ধ থাকায় গতকাল অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এই মুহূর্তে মার্কেটগুলো নিয়েও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারছেন না মেয়র আরিফ। গতকাল মার্কেটগুলো পরিদর্শন করেছেন শাহ্‌জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা। তাদের রিপোর্টের আলোকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ঘন ঘন ভূমিকম্পে সিলেটে চিন্তিত সবাই। বিশেষজ্ঞরাও দিতে পারছেন না কোনো সুখবর। তারাও জানেন না কেন এই ভূমিকম্প হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে- মাটির নিচে নিষ্ক্রিয় থাকা ফল্ট সক্রিয় হওয়ার কারণে এমনটি হচ্ছে। কিন্তু এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ইতিমধ্যে জাপান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে সিলেট সিটি করপোরেশন। জাপানের বিশেষজ্ঞ টিম সিলেটে আনার চেষ্টা চলছে। সেটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। গত ২৯শে মে কয়েকদফা ভূমিকম্প পরবর্তী সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে নগরের ৬ টি মার্কেট বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। গত বুধবার পর্যন্ত এ সকল মার্কেট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। মার্কেটগুলো হলো- সিলেট নগরীর মিতালি ম্যানশন, সিটি সুপার মার্কেট, মধুবন সুপার মার্কেট, রাজা ম্যানশন, সমবায় ভবন ও সুরমা মার্কেট। এই ৬টি ভবন মার্কেট আগে থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকায় ছিল বলে জানিয়েছে সিটি করপোরেশন। এছাড়া অতিঝুঁকিতে থাকা জিন্দাবাজারের একটি দোকান স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন- সিলেট নগরীর সিটি সুপার মার্কেটে প্রায় ৯০০ ব্যবসায়ী রয়েছেন। সব মিলিয়ে ব্যবসায়ীর সংখ্যা হবে কয়েক হাজার। ঘন ঘন ভূমিকম্প হওয়ার পর মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নিজে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব মার্কেট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সময় দিয়েছিলেন ১০ দিন। তার এই নির্দেশের পর ব্যবসায়ীরাও মার্কেট ও দোকান বন্ধ করে দেন। এতে করে অনেক ব্যবসায়ী ক্ষতির মুখে পড়েন। কারণ উল্লেখ করে সিটি সুপার মার্কেট, মধুবন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন- করোনার কারণে দীর্ঘ সময় তারা দোকান বন্ধ রেখেছেন। গত ঈদের আগে থেকে তারা দোকান খুলেছেন। কিন্তু ভূমিকম্পের কারণে মার্কেট বন্ধ করে দেওয়ায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছেন। অনেকেই নতুন করে বিনিয়োগ করেছিলেন। ফলে তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। সোমবার পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের বেঁধে দেয়া সময় হওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে অনেকেই দোকান খুলতে ছুটে এসেছিলেন মার্কেটে। কিন্তু মার্কেট কর্তৃপক্ষ তাদের দোকান খোলার অনুমতি দেয়নি। সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে- ইচ্ছা করে এসব মার্কেট বন্ধ করা হয়নি। ঝুঁকিপূর্ণ থাকার কারণেই বন্ধ করে দেয়া হয়। সিলেটে যে হারে ভূমিকম্প হচ্ছে এতে ওইসব মার্কেটে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। আশঙ্কা থেকে সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্তে পৌঁছা সম্ভব হচ্ছে না। তবে- এ অবস্থায় মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী শাহ্‌জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন। ওই বৈঠকে সিলেট নগরীতে ভূমিকম্পের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নির্ণয়ে একসঙ্গে কাজ করবে বলে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে শাহ্‌জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সিলেট সিটি করপোরেশন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ (সিইই) ও পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষকরা এই কাজ করবেন। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোকে খুঁজে বের করে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে এসব ভবন কতটুকু ঝুঁকিপূর্ণ- এ নিয়ে সিসিককে পরামর্শ দেবে শাবি। মেয়রের অনুরোধের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সকালে ও বিকালে পৃথক দু’টি তদন্ত দল ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটগুলো পরিদর্শন করেন। তাদের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মার্কেট খোলা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সিসিক। সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন- ‘ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সত্য। কিন্তু নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এখন বিশেষজ্ঞরা দেখছেন। তাদের মতামতের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বিশেষজ্ঞরা যদি মার্কেট খোলার পক্ষে মত দেন তাহলে এখানে আমার কিংবা সিটি করপোরেশনের আপত্তি থাকবে না।’
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us