করোনাভাইরাসের শুরুতে ঘরবন্দী মানুষ চাল-ডাল-মাছ-মাংসের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাশাপাশি সুরক্ষাসামগ্রী, ওষুধ, ইলেকট্রনিক পণ্য অনলাইনে কিনতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এতে অনলাইনভিত্তিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবসাও বাড়তে থাকে। করোনা পরিস্থিতির ওঠানামার ওপর অনলাইনভিত্তিক বেচাবিক্রিও ওঠানামা করে। তবে অনলাইনে কেনাকাটায় মানুষ অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। এতে এই খাতের সম্ভাবনাও বাড়ছে।
উদ্যোক্তারা বলছেন, করোনাকালে অনলাইনভিত্তিক ব্যবসার যে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, সেটি ধরে রাখতে বাজেটে কর অবকাশ সুবিধা, কয়েক বছরের জন্য ভ্যাট অব্যাহতির মতো নীতিসহায়তা দেওয়া দরকার। তাহলে পুরোনোদের পাশাপাশি নতুন উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ করবে। তাতে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
এমএফএস প্রতিষ্ঠানের কর বাড়তে পারে
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয়, এমন প্রতিষ্ঠানের করপোরেট কর কমলেও শুধু মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আর্থিক সেবা (এমএফএস) দেয়, এমন প্রতিষ্ঠানের কর বাড়তে পারে। এই ধরনের প্রতিষ্ঠান এখন সাড়ে ৩২ শতাংশ হারে করপোরেট কর দেয়। নতুন অর্থবছরে এসব প্রতিষ্ঠানকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান শ্রেণিতে ফেলা হতে পারে। এতে তাদের ওপর ৪০ শতাংশ কর আরোপ হতে পারে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হলে তা সাড়ে ৩৭ শতাংশে নেমে আসবে।
রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে ২০১৭ সালে সাভারের হেমায়েতপুরে চামড়াশিল্প নগরীতে ট্যানারি স্থানান্তরের পর থেকে আমরা চামড়া খাতের উদ্যোক্তারা ভালো নেই।
শিল্পনগরীটি পরিবেশবান্ধব না হওয়ায় রপ্তানি বাজারে সুবিধা করা যাচ্ছে না। তার ওপর এক বছরের বেশি সময় ধরে করোনা মহামারি চলছে। এদিকে সামনের মাসেই পবিত্র ঈদুল আজহা। তখন কোরবানির পশুর চামড়া কেনা নিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বাজেটে নীতিসহায়তা দরকার।
অনলাইন ব্যবসায় নীতিসহায়তা দরকার
করোনা মহামারিতে অনলাইনে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। অন্যান্য দেশে অনলাইনে পণ্য কিনলে মূল্য কম পড়ে। আর আমাদের দেশে বেশি। এটির মূল কারণ হচ্ছে ভ্যাট। ২০১৮ সালে অনলাইন কেনাকাটায় ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়। অন্যদিকে দেশের ৯০ শতাংশ দোকানপাটেই ভ্যাট দিতে হয় না। এ জন্য দোকানপাটের চেয়ে অনলাইনে কেনাকাটায় বেশি খরচ হয়।
সম্প্রতি ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও সাভারের আটটি বিপণিবিতানে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের এক জরিপে দেখা গেছে, ৮৮ শতাংশ দোকান ভ্যাট দেয় না। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকায় এই অবস্থা হলে মফস্বলের চিত্র আরও করুণ হবে। সে কারণে অনলাইন কেনাকাটায় আগামী দুই-তিন বছরের জন্য ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হলে খাতটি বেড়ে ওঠার সুযোগ পাবে।