অতি সম্প্রতি বাংলাদেশ সচিবালয়ে এক নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে। নজিরবিহীন বলা ঠিক হবে না, কারণ আমাদের ইতিহাসে এ রকম ঘটনা অনেক ঘটেছে। দিল্লির দরবারে তো বটেই, মুর্শিদাবাদেও উৎকোচ গ্রহণ ও নানা অনিয়মের কথা আমরা জানি। অনিয়মের কারণে হত্যা, রাহাজানি- এসব ঘটনা আমাদের জীবনের নিত্যনৈমিত্তিকতায় মিশে আছে। একবার নবাব সিরাজউদ্দৌলা তার খালা ঘষেটি বেগমের বাড়ি তল্লাশি করে নগদ চার কোটি টাকা, ৫০ লাখ মোহর এবং আরও অনেক সোনাদানা, হীরা-জহরত উদ্ধার করে মুর্শিদাবাদে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেন। এই টাকার উৎস হচ্ছে ঘষেটি বেগমের স্বামী ঢাকার নায়েবে নাজিম ছিলেন। কিন্তু তিনি এবং তার স্বামী কখনও ঢাকায় আসেননি। রাজবল্লব নামে এক দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তির মাধ্যমে ঢাকা শাসন করতেন।
সিরাজউদ্দৌলার পতনের পর মীর জাফর নবাবী পেয়ে কিছুতেই সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি। সে কারণেই শাহজাদা মীরনকে নবাব বানানোর জন্য লর্ড ক্লাইভকে এক কোটি ৬৯ লাখ টাকা ঘুষ দেয়। তারপরও শাহজাদা মীরনকে নবাবী দেওয়া হয়নি। অবশ্য এর মধ্যে মীরন মারাও যায়। ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানির লোকেরা প্রচুর ঘুষ নিত, অন্যায়-অবিচার করত। সেই থেকেই ভারত স্বাধীন হলেও লাল ফিতার ভেতরে প্রচুর দুর্নীতি হতে থাকে। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহরু এই দিকটায় নজর দিয়ে শক্তিশালী দুটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন। একটি নির্বাচন কমিশন, আরেকটি সিবিআই। এরা ক্ষমতাসীন দলের তোয়াক্কা না করে নিজেদের মতো কাজ করার সুযোগ পেয়েছে।