আমাদের ছেলেবেলায় গ্রামের একটা খুবই সাধারণ দৃশ্য ছিল এক বা দুটি শিশু একটা সুপারির খোলে বসে আছে আর এক-দুই জন সেটা টেনে নিয়ে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর যারা বসেছিল তারা টানছে আর যারা টানছিল তারা বসে মজা পাচ্ছে। চোখ বন্ধ করে শিশুকালে ফিরে গেলেই, সেই দৃশ্য অনেকেরই চোখে ভেসে উঠবে। গ্রামে শিশু-কিশোরদের কাছে এটাই ছিল টানাগাড়ি খেলা। যারা গ্রামে বড় হয়েছেন এমন খেলা খেলেননি বা দেখেননি, তেমন হয়তো পাওয়াই যাবে না।
পান-সুপারি চেনে না বাংলাদেশে এমন লোক খুঁজেও পাওয়া যাবে না। বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে মিশে আছে পান-সুপারি। সুপারি একটি অর্থকরী ফসল। এর বৈজ্ঞানিক নাম অৎবপধ পধঃবপযঁ। এটা এরিকাসিয়া পরিবারের এরিকা গণের লম্বা ও সরু পামজাতীয় গাছ। এর গোলাকৃতি শক্ত বীজ পানের সঙ্গে কুচি করে বা শুধু খাওয়া হয়। বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, পাকিস্তান, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, চীন প্রভৃতি দেশে সুপারির চাষ হয়। বাংলাদেশের উপকূলবর্তী এলাকায়, বিশেষ করে বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার প্রভৃতি জেলায় প্রচুর সুপারি জন্মে। সিলেট, রংপুরেও কিছু কিছু সুপারির চাষ হয়। বাগান আকারে, বাড়ির আশপাশে বা পুকুরের ধারে সাধারণত সুপারি গাছ লাগানো হয়। সুপারিকে স্থানীয় ভাষায় অনেকেই গুয়া বলে। ধারণা করা হয় এই গাছের উৎপত্তিস্থল ফিলিপাইনে।