করোনার অতিমারির এই সময়ে বিশ্বব্যাপী মানবিক সংকট এত প্রকট হয়ে উঠেছে যে তাকে উপেক্ষা করা অসম্ভব এবং মনে করি অনুচিত। পাশ্চাত্য সভ্যতার অভূতপূর্ব উন্নয়ন, পার্থিব জীবনের চরম উৎকর্ষের মধ্যেও কবির ভাষায়—‘এই কায়াবহুল সভ্যতার’ বিকার স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এ মন্তব্য তিনি করেছেন গত শতকের ত্রিশের দশকে। আজ একবিংশ শতাব্দীর এই দুঃসময়ে তাঁকে স্মরণ করার শ্রেষ্ঠ উপায় হতে পারে তাঁরই ভাবনার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পথহারা, গতিহারা মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে পণ্যাসক্ত বিকারগ্রস্ত সভ্যতার সংকট নিয়ে শেষ জন্মদিনে এবং জীবনের বিভিন্ন পর্বে কবির উচ্চারিত তাৎপর্যপূর্ণ বাণীর শরণ নেওয়া।
নিশ্চিত করে বলা যায়, এখন অতিমারির দাপটের মধ্যেও পৃথিবীর নানা প্রান্তে আত্মঘাতী বোমা কিংবা বিমান থেকে গোলাবর্ষণের শিকার হচ্ছে অসহায় নারী-পুরুষ-শিশু, হয়তো ভূমধ্যসাগরে তলিয়ে যাচ্ছে ভাগ্যান্বেষী মরিয়া মানুষ, ধর্মান্ধতার বলি হচ্ছে মুক্তপ্রাণ ভাবুক কিংবা ভিন্নমতের অসংখ্য মানুষ, ধর্ষিতা হচ্ছে নারী ও কন্যাশিশু, অস্ত্রের মুখে উত্খাত হচ্ছে পরিবার, প্রাণভয়ে দেশান্তরি হচ্ছে অনেকেই, গুঁড়িয়ে যাচ্ছে বসতভিটা, পুড়ে খাক হচ্ছে জনপদ। সত্যিই মানবসভ্যতা বিপন্ন আজ।