আর কোনো জন্মদিনে কোনো আয়োজন হবে কি? হয়তো আমরা করব কিন্তু হাসান শাহরিয়ারকে পাব না। তবুও চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন প্রবীণ সাংবাদিক হাসান শাহরিয়ার। মাত্র কয়েক দিন আগেই তিনি প্রয়াত হয়েছেন। হয়তো পরিণত বয়সে প্রস্থানের সময় এগিয়ে এসেছিল। কিন্তু করোনার থাবায় তার আকস্মিক বিদায় কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মেনে নেয়া কষ্টকর, যারা পেয়েছিলাম তার অপাত্য স্নেহ।
কঠিন অসুস্থতাকে নিয়ন্ত্রণে রেখে তারুণ্যের আড্ডায় যোগ দেয়া প্রবীণের নাম হাসান শাহরিয়ার। ৭০ বছর বয়সেও পাঁচতলার সিঁড়ি ভাঙতেন অনায়াসে। কিন্তু করোনা তাকে ছিনিয়ে নিল সহসাই। দুদিনের হাসপাতাল বাস থেকে আর ফিরলেন না তিনি। হাসান শাহরিয়ার বাংলাদেশের একমাত্র সাংবাদিক, যিনি কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতো আনর্জাতিক সংগঠনে দু-দুবার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন। নিজের দেশ তাকে বেঁচে থাকতে রাষ্ট্রীয় সম্মান একুশে পদক বা স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করতে পারেনি কিন্তু সিজিএ তাকে প্রেসিডেন্ট ইমেরিটাস করেছিল। এই কিছুদিন আগেও জাতীয় প্রেস ক্লাবের নির্বাচনে অভিভাবকের ভূমিকায় ছিলেন তিনি। রাষ্ট্র সম্মান না জানালেও দেশের সাংবাদিক সমাজের বাইরেও সব শ্রেণী-পেশার নেতৃস্থানীয়দের কাছে শ্রদ্ধা-ভালোবাসার মানুষ ছিলেন হাসান শাহরিয়ার। তাই ২০১৮ সালের ২৫ এপ্রিল তার জন্মদিনে প্রকাশিত ৪০৮ পৃষ্ঠার বড় বইটির নাম ‘হাসান শাহরিয়ার সাংবাদিকতার জীবন্ত কিংবদন্তি’। সমাজবিজ্ঞানী ড. মীজানুর রহমান শেলী সেই বইটি সম্পাদনা করেছেন। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, শামসুজ্জামান খান থেকে শুরু নানা গুণীজনের লেখায় চিত্রিত হয়েছেন বহুমাত্রিক হাসান শাহরিয়ার। যেখানে প্রথিতযশা সম্পাদক গোলাম সারোয়ার লিখেছেন, হাসান শাহরিয়ার নামটাই অন্য রকম।