সারা পৃথিবী কভিড-১৯ রোগে পর্যদুস্ত। বাংলাদেশ তার ব্যতিক্রম নয়। ঢাকা ও অন্যান্য বড় শহরে চিকিৎসকদের জট ও তাদের দালালদের প্রতারণার নেট বিস্তৃত। দেশের অন্যান্য অঞ্চলে চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি একটি দুর্ভাগ্যজনক সত্য এবং নিবেদিত নার্সের সেবা স্বপ্নের ছায়ায় পরিণত হওয়ায় তাদের দায়িত্ব পালন করছে অতিরিক্ত বকশিশের বিনিময়ে আয়া ও সুইপাররা। বড় হাসপাতালে হুইল চেয়ার ও ট্রলির জন্যও ঘুষ দেওয়ার ঘটনা সর্বজনবিদিত। টেকনিশিয়ানদের প্রয়োজনীয়তা চিকিৎসা প্রশাসকদের চিন্তার অন্তর্ভুক্ত নয়। দেশে প্রয়োজন নিদেনপক্ষে তিন লাখ চিকিৎসক, আছে এক লাখের অনধিক। প্রতি বছর সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজসমূহে ২০,০০০ করে ছাত্রভর্তি করালেও কাম্য সংখ্যায় পৌঁছতে ১২-১৫ বছর লাগবে।
ঢাকায় হাসপাতালে শয্যার স্বল্পতা, ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (ICU) দুষ্প্রাপ্যতা এবং ব্যবহৃত ওষুধের অত্যধিক মূল্য ও রোগ নির্ণয় প্রক্রিয়ার অধিক চার্জ, মেডিকেল যন্ত্রপাতি ও সামগ্রীর ওপর অকল্পনীয় বিবিধ শুল্ক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনাকে জনগণের সামর্থ্যরে বাইরে নিয়ে গেছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে রোগীকে চিকিৎসার প্রায় ৭২% খরচ নিজেকে বহন করতে হয় (Out of Pocket Expense-OOP))। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে রোগীকে এত অধিক পরিমাণ চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে হয় না। জনগণের অজ্ঞতার কারণে সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার পরিবর্তে আইসিউ (ICU) প্রীতি ও আকর্ষণ বেড়েছে, দালালদের আয় বেড়েছে এবং রোগগ্রস্ত পরিবার সর্বস্বান্ত হচ্ছে।