যে তরুণরা আজ পরস্পরকে খুন-জখম করছে, আসক্ত হচ্ছে নানা ধরনের মাদকে, একসময় তারা যেমন মুক্তিযুদ্ধে ছিল, তেমনি পূর্ববর্তী রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনেও ছিল। রাষ্ট্রভাষার জন্য আন্দোলনে জয়যুক্ত হয়েছে; কিন্তু জয়ের প্রমাণ তো দেখতে পাই না, দেখতে পাই মাতৃভাষা কেবলি কোণঠাসা হচ্ছে। শহীদ দিবসের প্রভাতফেরিকে আদর-আপ্যায়ন করে পাহারা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে মধ্যরাতে, সকালের সেই অরুণ আলো মলিন হয়ে গেছে। রাতের অন্ধকারের কাছে তার আত্মসমর্পণ ঘটেছে। পুঁজিবাদের অপ্রতিরোধ্য তৎপরতা যে সর্বগ্রাসী হতে চলেছে এ হচ্ছে তারই একটি নিদর্শন। একুশ ছিল রাষ্ট্রবিরোধী এক অভ্যুত্থান, রাষ্ট্র তাকে যথাযোগ্য মর্যাদা দেওয়ার অছিলায় আটক করে ফেলেছে। ওদিকে উচ্চ আদালতে বাংলা নেই, ঠিকমতো নেই উচ্চশিক্ষায়ও। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলা বিভাগে ভর্তি হতে হবে শুনলে শিক্ষার্থীদের মুখ শুকায়, অভিভাবকরা প্রমাদ গোনেন। স্মার্ট ছেলে-মেয়েরা বাংলা বলতে অস্বস্তি বোধ করে, শিক্ষিত বয়স্করাও বাংলা বলেন ইংরেজির সঙ্গে মিশিয়ে। প্রমাণ দেয় যে তারা পিছিয়ে নেই। এই অস্বাভাবিকতাই এখন নতুন স্বাভাবিকতা।