একটি দেশের উন্নয়নের প্রধান সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে সে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা। অভ্যন্তরীণ লেনদেন থেকে শুরু করে বৈদেশিক বাণিজ্য, বৈদেশিক মুদ্রার আদান–প্রদান, জনগণের সঞ্চয় প্রবণতা বৃদ্ধি এবং তা আমানত হিসেবে সুরক্ষা, গচ্ছিত আমানতের সদ্ব্যবহার তথা ঋণ প্রদান ও আদায়, বিনিয়োগ—এমন প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যাংকের নিরবচ্ছিন্ন ভূমিকা রয়েছে। বলা যায় কোন দেশের অর্থনীতি কতটা উন্নত, তা সে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা কতটুকু উন্নত, তা কতটা গণমুখী বা সে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থার গভীরতা ইত্যাদি পরিসংখ্যান দেখে বোঝা যায়।
বাস্তবিক অর্থেই উন্নত অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় জনগণ ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর খুবই বেশি মাত্রা নির্ভরশীল। মৌলিক ব্যাংকিংয়ের কথাই ধরা যাক, যেখানে জনগণের অর্থনৈতিক উন্নতি তথা আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তার সুরক্ষা প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে। এটাই সত্যি যে মানুষ যা আয় করে তার পুরোটা সে একসঙ্গে একই সময়ে ভোগ করে না। ভবিষ্যৎ সুরক্ষা ও বিনিয়োগের জন্য তা সঞ্চয় হিসেবে গচ্ছিত রাখে। কালের পরিক্রমায় নানা ধরনের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও ব্যাংকিং ব্যবস্থাই সবচেয়ে জনপ্রিয়। মানুষ তাই তার কষ্টার্জিত আয় সুরক্ষার জন্য প্রথমেই ব্যাংকের কথাই মনে করে থাকেন।
অন্যদিকে মানুষ বিনিয়োগের নিমিত্তে অতীতে অনানুষ্ঠানিক নানা উৎস থেকে ধার করলেও কালক্রমে তা সংকুচিত হয়ে এসেছে। অতীতে মানুষ কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগের জন্য পরিচিতজনের নিকট থেকে ধারদেনা করতেন। সমাজে অনানুষ্ঠানিক অনেকে যাঁরা মহাজন হিসেবে কথিত, তাঁরাও বিনিয়োগের ঘাটতি পূরণে অর্থায়ন করতেন। কিন্তু আধুনিক সময়ে বিনিয়োগের পরিধি, পরিমাণ ও ধরন সবকিছুই পরিবর্তিত হওয়ার কারণে অনানুষ্ঠানিক অর্থায়ন একেবারেই সংকুচিত হয়ে এসেছে। বর্তমানে তাই যে কেউই বিনিয়োগের ঘাটতি পূরণে আনুষ্ঠানিক অর্থায়নের উৎস সন্ধান করে থাকেন।