বারো মাসে তেরো পার্বণের দেশ বাংলাদেশ। অতীতে স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রামীণ সমাজে নানা উপলক্ষে অনেক উৎসব বা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। এমন এক উৎসবের দিন হচ্ছে চৈত্রসংক্রান্তি। অভিধানে সংক্রান্তি শব্দের অর্থ দেওয়া আছে বাংলা মাসের শেষ দিন। তবে অন্য মাসগুলোতে দেখা যায় না সংক্রান্তি প্রসঙ্গ, শুধু পৌষ আর চৈত্র মাসেই সংক্রান্তি উৎসব চলে আসছে বাংলাদেশ, পশ্চিম বাংলা, ত্রিপুরা, আসাম ও বিহার অঞ্চলে। চৈত্রসংক্রান্তির উৎসব শতাব্দী পরম্পরায় চলে আসছে বাঙালি সমাজে। প্রধানত হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব চৈত্রসংক্রান্তি। তবে পাশাপাশি বসবাসের কারণে এখন মুসলিম সমাজও চৈত্রসংক্রান্তির নানা আয়োজনে অংশগ্রহণ করে থাকে। বর্তমানে চৈত্রসংক্রান্তির উৎসব হয়ে উঠেছে ধর্মনিরপেক্ষ সর্বজনীন উৎসব।
ব্যক্ত হয়েছে যে বাংলা সনের প্রতিটি মাসের শেষ দিনটিকে সংক্রান্তি বলা হলেও চৈত্র মাসের সঙ্গেই সংক্রান্তি গভীরভাবে সংশ্লিষ্ট হয়ে গেছে। শাস্ত্র ও লোকাচার অনুসারে এই দিনে স্নান, দান, ব্রত, উপাসনা, উপবাস—এসব ক্রিয়াকর্মকে পুণ্য কাজ বলে বিশ্বাস করা হয়। ভাবা হয়, এই দিনে উপবাসব্রত পালন করা, উপাসনা করা, পূজা দেওয়া প্রভৃতি ক্রিয়াকর্ম অশেষ কল্যাণ নিয়ে আসে। অতীতে চৈত্রসংক্রান্তির দিনে হিন্দু সমাজের ঘরে ঘরে প্রভাতি পূজার আয়োজন করা হতো। পূজা শেষে শুভেচ্ছা বিনিময় ছিল একটা উল্লেখযোগ্য প্রথা। এ সময় ঘরে ঘরে নারকেল, খৈ ও চিড়ার নাড়ু তৈরি করা হয়। পূজা শেষে প্রসাদ হিসেবে এসব সামগ্রী সবাইকে খেতে দেওয়া হয়।