করোনার এ মহামারীতে সারা বিশ্ব কঠিন এক বাস্তবতার মধ্যে অতিবাহিত করছে। বাংলাদেশে যখন আমরা দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমিত হয়ে দিনে সর্বোচ্চ ৭৭ জন মৃত্যুবরণ দেখছি, তেমনই একটি সময় আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছেন অনেক গুণী শিল্পী। এর মধ্যে আমাদের স্বাধীন বাংলা বেতারের নমিতা ঘোষ, ইন্দ্রমোহন রাজবংশীর মৃত্যুতে চোখের পানি মুছতেই না মুছতে আরেক জনপ্রিয় রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী মিতা হক চলে গেলেন রবিবার ভোর ৬টা ২০ মিনিটে। বয়স হয়েছিল ৫৯। মিতা দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক নানা জটিলতায় ভুগছিলেন, সেই সঙ্গে চলছিল ডায়ালাইসিস। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ হয়েও সেরে উঠেছিলেন। ১৯৬২ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন মিতা হক। প্রথমে তাঁর চাচা ওয়াহিদুল হক পরে ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন ও সন্জীদা খাতুনের কাছে গানের তালিম নেন। ১৯৭৭ সাল থেকে তিনি নিয়মিত বেতার ও টেলিভিশনে গান গান। ২০১৬ সালে শিল্পকলা পদক লাভ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মিতা হক বাংলা একাডেমি রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন। সংগীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০২০ সালে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদক লাভ করেন।
১৯৭৪ সালে বার্লিনে আন্তর্জাতিক যুব ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণ ছাড়াও দেশ ও দেশের বাইরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মিতা অংশগ্রহণ করেন। দীর্ঘদিন যাবৎ ছায়ানটে রবীন্দ্রসংগীতে শিক্ষকতাও করেছেন। একসময় ছায়ানটে রবীন্দ্রসংগীত বিভাগের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ‘সুরতীর্থ’ নামে একটি সংগীত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের সহসভাপতি ছিলেন। এককভাবে মুক্তি পাওয়া মোট ২৪টি গানের অ্যালবাম তাঁর মুক্তি লাভ করেছে।