গতবছরের ৭ এপ্রিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সে করোনা রোগীদের চিকিৎসার সঙ্গে জড়িতদের জন্য প্রণোদনা ঘোষণা করেন। ঘোষণার এক বছর পরও কেউ তা পাননি।
করোনা মহামারিতে সম্মুখসারির যোদ্ধা বলা হয় চিকিৎসক, নার্সসহ অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের। প্রণোদনা ছিল দুই মাসের মূল বেতন। এ ছাড়া করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে কাজ করা চিকিৎসকদের ১৫ দিনের দৈনিক দুই হাজার টাকা ভাতাও ছিল। করোনা আক্রান্ত হলে চিকিৎসকদের জন্য পাঁচ থেকে ১০ লাখ টাকার স্বাস্থ্যবীমাও ছিল। মূল বেতনের যে প্রণোদনা দেওয়ার কথা সেটা এখন পর্যন্ত কেউ পায়নি বলে জানান করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোতে দায়িত্ব পালন করা চিকিৎসকরা।
বিশেষ সম্মানী পেলেন ১৪ প্রতিষ্ঠানের স্বাস্থ্যকর্মীরা
০১ এপ্রিল ২০২১ প্রকাশিত এ সংক্রান্ত খবর: জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছিল সরকার। সেই ঘোষণা অনুযায়ী এবার বসুন্ধরা কনভেনশন গ্রিড হাসপাতালসহ ১৪ প্রতিষ্ঠানের স্বাস্থ্যকর্মীদের দুই মাসের বিশেষ সম্মানী দেয়া হয়েছে।
নির্দেশনার ৯ মাস পর প্রণোদনা ছাড়
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ প্রকাশিত এ সংক্রান্ত খবর: নির্দেশনা জারির নয় মাস পর কোভিড-১৯ আক্রান্তদের সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একশ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ১৮০০ ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রণোদনার ৯ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। আরও ৩ হাজার ৬৮৭ জনকে প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। তাদের পেছনে ব্যয় হবে ১৭ কোটি টাকা। সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে এসব উপকারভোগীকে এককালীন তাদের দুই মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ দেওয়া হচ্ছে।
চিকিৎসক-নার্সদের প্রণোদনার জন্য ৯ কোটি টাকা চায় স্বাস্থ্য বিভাগ
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ প্রকাশিত এ সংক্রান্ত খবর: করোনা আক্রান্তদের সেবায় নিয়োজিত ৮০০ চিকিৎসক, ৪৬৯ নার্স এবং ৫৪১ জন স্বাস্থ্যকর্মীর প্রণোদনার জন্য ৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা অর্থ বরাদ্দ চেয়েছে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ। সম্প্রতি স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের বাজেট শাখার পাঠানো চিঠিতে ওই চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ২ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়।
৩০০ দিনে দেশে প্রাণ হারিয়েছেন ১২৫ চিকিৎসক, প্রণোদনা মাত্র একজনের
১ জানুয়ারি ২০২১ প্রকাশিত এ সংক্রান্ত খবর: চলতি বছরের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত কোভিড-১৯ সংক্রমণের শুরু থেকে ৩০০ তম দিন শেষে দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে দুই হাজার ৮৯০ জন চিকিৎসকের মাঝে। এছাড়াও এক হাজার ৯৮২ জন নার্স ও তিন হাজার ২৮৫ জন স্বাস্থ্য কর্মী কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে সারা দেশে। চিকিৎসকদের সর্ববৃহৎ সংগঠন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) তথ্য অনুসারে এই সময়ে দেশ হারিয়েছে ১২৫ জন চিকিৎসককে। দেশে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব মোকাবিলার শুরুতে প্রণোদনার ঘোষণা দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র একজন চিকিৎসক প্রণোদনা পেয়েছেন।
২২ অক্টোবর ২০২০ প্রকাশিত এ সংক্রান্ত খবর: করোনা রোগীদের সরাসরি সেবাদানকারী সরকারি চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রণোদনা প্যাকেজ তিন মাসেও বাস্তবায়ন হয়নি। স্বাস্থ্যের এই সম্মুখযোদ্ধাদের তালিকা ও অর্থ বিতরণ সংক্রান্ত নীতিমালা চূড়ান্ত না হওয়ায় এটি ঝুলে আছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের সরাসরি সেবা দিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। অনেক কর্মী সেবা দিতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। আবার আক্রান্তের পর সুস্থ হয়ে অনেকে কাজে ফিরেছেন। তাদের এই ত্যাগের বিষয়টি বিবেচনা করে করোনাভাইরাসের সম্মুখযোদ্ধা (যারা সরাসরি চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন) ডাক্তার-নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের বিশেষ প্রণোদনার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।