বাংলাদেশে ভ্যাকসিন উৎপাদনের অনুমতি দিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকাকে অনুরোধ করেছে সরকার।
ভ্যাকসিন উৎপাদনের লক্ষ্যে বীজ থেকে তা উৎপাদনের প্রযুক্তি অথবা আমদানি করে প্যাকেজিং করার লক্ষ্যে বিপুল পরিমাণ ভ্যাকসিন সরবরাহের কথা উল্লেখ করে ব্রিটিশ-সুইডিশ বহুজাতিক ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার কাছে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গত বৃহস্পতিবার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা অ্যাস্ট্রাজেনেকাকে ১০ দিন আগে একটি চিঠি পাঠিয়ে অনুরোধ জানিয়েছি আমাদেরকে তাদের প্রযুক্তি দিতে, যাতে আমরা স্থানীয়ভাবে ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে পারি। আমাদের সেই সক্ষমতা রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার অ্যাস্ট্রাজেনেকার কাছে বীজ অথবা বিপুল পরিমাণ ভ্যাকসিনের সরবরাহ চেয়েছে। যাতে কম খরচ ও বহুল ব্যবহৃত এই ভ্যাকসিনটি উৎপাদন অথবা বোতল-জাত করা যায়।’
ভাইরাসের বীজ ও হোস্ট সেল ব্যাংক ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়ে ৩০ জনের রক্তে জমাট বেঁধেছে: যুক্তরাজ্য
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা নেওয়ার পর যুক্তরাজ্যে ৩০ জনের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার প্রমাণ পাওয়া গেছে। দেশটির ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ২০ জনের মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধেছে। যা বিরল ঘটনা। আর পাঁচজনের শরীরে সামান্য হলেও রক্ত জমাট বেঁধেছে।
নতুন এই প্রতিবেদনের ফলে দেশটিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন নেওয়ার পর রক্তে জমাট বাঁধা মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩০ জনে।
জার্মানিতে ৬০-এর কমবয়সীদের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেয়া স্থগিত
জার্মানি বলছে, রক্ত জমাট বাঁধার বিরল এক ঝুঁকির কারণে তারা ৬০ বছরের কম বয়স্ক লোকদের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাস-প্রতিরোধী টিকা দেয়া স্থগিত করছে। জার্মানিতে এ পর্যন্ত মোট ২৭ লক্ষ লোককে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩১ জনের মধ্যে একটি বিরল ধরনের রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা দেখা গেছে। যাদের এ সমস্যা দেখা দেয় তারা প্রায় সবাই মাঝবয়সী বা তার চেয়ে কমবয়স্ক মহিলা।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কয়েকটি দেশে এর আগেও এই একই সমস্যার কথা উল্লেখ করে সতর্কতামূলক কারণে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেয়া স্থগিত করা হয়েছিল। কিন্তু তার কিছু দিন পর ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ উভয়েই এই টিকা নিরাপদ ও কার্যকর বলে মত দেবার পর আবার এ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেয়া শুরু হয়।
আবার অ্যাস্ট্রাজেনেকা নিয়ে সংশয়, জার্মানিতে নতুন নিষেধাজ্ঞা
অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোম্পানির করোনা টিকা নিয়ে বিভ্রান্তি ও সংশয় যেন কিছুতেই কাটার নয়৷ করোনা ভাইরাস মোকাবিলার ক্ষেত্রে এই টিকার কার্যকারিতা নিয়ে তেমন চর্চা হচ্ছে না৷ বরং কিছু মানুষের মারাত্মক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ফলে একাধিক দেশ নির্দিষ্ট বয়সের মানুষের জন্য এই টিকা দেওয়া হয় বন্ধ করছে অথবা সতর্কতা জারি করছে৷ মঙ্গলবার জার্মানি আবার অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার ক্ষেত্রে নতুন সিদ্ধান্ত নিলো৷
জাতীয় ভ্যাকসিন কমিশনের মূল্যায়নের পর ফেডারেল ও রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা বুধবার থেকে শুধু ষাটের বেশি বয়সের মানুষের জন্য এই টিকা দেবার সিদ্ধান্ত নিলেন৷ সুযোগ পেলে ষাটের কম বয়সের মানুষও এই টিকা নিতে পারেন, তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ শুনে ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে তাদের সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷