ইসলামি শিক্ষার মধ্যে থেকেই পর্যায়ক্রমে বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষার মতো শিক্ষক প্রশিক্ষণ, ল্যাবরেটরি স্থাপন, ভৌত অবকাঠামো নির্মাণসহ মাদ্রাসাগুলোকে সম্পূর্ণভাবে আধুনিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্মাণ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। কিন্তু সেখানে শিক্ষাদানের জন্য যোগ্য শিক্ষক রয়েছেন কি না, তা বিবেচনায় নিতে হবে। বিশেষ ব্যুৎপত্তিসম্পন্ন বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ না দিলে মাদ্রাসাগুলো সার্বিকভাবে পরিচালিত হতে পারবে না। পুরোনো শিক্ষকদের পরিবর্তে সম্পূর্ণভাবে আধুনিক জ্ঞানসম্পন্ন নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া প্রয়োজন। আমরা মাঠপর্যায়ের তথ্য থেকে জানতে পারি যে কিছুদিন আগে পর্যন্ত দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেশ কিছু ডিসিপ্লিন মাদ্রাসার ছাত্রদের ভর্তির বিষয়ে আপত্তি করছিল।
অত্যন্ত যৌক্তিকভাবেই দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় মাদ্রাসাছাত্রদের সাধারণ স্কুল ও কলেজে পড়া ছাত্রদের সমতুল্য weightage দিতে রাজি হয়নি। কিন্তু ধর্মীয় বিষয়টিকে বাধ্যতামূলক হিসেবে রেখেও অন্যান্য ধারার মতো বাংলা, ইংরেজি, বিজ্ঞান, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক কোনো বিষয়ে একই মানের শিক্ষা প্রদান করা হলে মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে কারো কোনো আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু শুধু ইসলামি বিষয়গুলোর ওপর নির্ভর করে মাদ্রাসা থেকে উত্তীর্ণরা যে সার্টিফিকেট পাবে, তা কখনোই স্কুল ও কলেজের সমমান বলে বিবেচনা করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে ধাপে ধাপে মাদ্রাসাগুলোর infrastructural development, শিক্ষক প্রশিক্ষণ, বর্তমান রাষ্ট্রীয় ভিত্তিতে নতুন শিক্ষক নিয়োগ ও অন্যান্য গুণগত পরিবর্তন আনা আবশ্যক। সুতরাং ইসলাম ধর্ম ধ্বংস হলো বলে যারা মাদ্রাসাশিক্ষার্থী এবং দেশের সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন, তারা মূলত প্রকৃত অর্থে মাদ্রাসাশিক্ষার আধুনিকায়ন চাইছেন না। এরা সত্যিকারভাবে ইসলামবান্ধব নন, বরং ইসলাম ধর্মের বিনষ্টকারী একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলকারী গোষ্ঠী, যারা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক কোনো কিছু অন্তর্ভুক্ত থাকলেই তাকে ধর্মহীনতা বলে প্রচার করে।