শিক্ষকই জাতি গড়ার কারিগর- এ কথাটি বাঁচিয়ে রেখেছেন যারা, তাদের মধ্যে অগ্রগণ্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। শিক্ষাগুরুর মস্তক চির উন্নত- মৃত্যু অথবা লাঞ্ছনা কিছুই তার মর্যাদার কাছে গণ্য নয়। এমন দৃষ্টন্ত বিরল। মুজিবুর রহমানের কথা কেউ কেউ লিখেছেন। তবে যতটা চর্চা হওয়া উচিত, ততটা মোটেই নয়। তার কথা মনে এলে গর্বে মাথা উঁচু হয়ে ওঠে।
১৯৭১ সালের মে মাস, ১২ তারিখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ যেন দুলে ওঠে, আলোড়িত হয়, চাপা গুঞ্জন, তবু কথাটি চারদিকে ছড়িয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চিঠি লিখেছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই গণিত বিভাগের অধ্যাপক, নাম মুজিবুর রহমান, কিন্তু তিনি এ নামে আর পরিচিত হতে চান না। তিনি নিজের নাম দিয়েছেন ‘দেবদাস’।
মুজিবুর রহমানের নাম পরিবর্তন নিয়ে হয়তো ধামাধরা তথাকথিত শিক্ষকদের তেমন আপত্তি ছিল না। কিন্তু চিঠিতে তিনি আরো লেখেন- বিশ্ববিদ্যালয় সেনানিবাসে পরিণত হয়েছে, দেশে গণহত্যা চলছে, স্বাধীনতাযুদ্ধ চলছে, এ অবস্থায় তিনি একজন শিক্ষক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে থাকতে পারেন না। যখন বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজের মর্যাদা ফিরে পাবে, কেবল তখনই তিনি এ প্রাঙ্গণে ফিরে আসবেন।