স্বাধীন হবার পর পর অনেক তীব্র সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। সে তার যাত্রা শুরু করেছিল, বলতে গেলে, শূন্য থেকে। তখন তাকে যৎকিঞ্চিৎ সাহায্য দিয়েছিল বহু দেশ। কিন্তু তার অর্থনৈতিক অবস্থা দেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বাংলাদেশের নাম দিয়েছিলেন ‘তলা-বিহীন ঝুড়ি।’ তার ধারণা ছিল যে, যতোই সাহায্য করা হোক না কেন, বাংলাদেশ কখনও নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে না। কিন্তু আজ বাংলাদেশকে দেখে সমগ্র বিশ্বই বিস্মিত হচ্ছে। উন্নয়নের এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বাংলাদেশ। সে ক্রমে উপরে উঠছে, আরও উপরে উঠছে। অজস্র তার অর্জন। আমরা কেবল কয়েকটা বিষয়ের দিকে দৃষ্টি দেবো।
ধরা যাক, কৃষির কথা। যে-বাংলাদেশ কয়েক বছর আগেও বিদেশ থেকে খাদ্য আমদানি করতো, সেই বাংলাদেশই এখন তার সতেরো কোটি লোকের জন্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্যশস্য উৎপাদন করছে। কেবল তাই নয়, সে তার উদ্বৃত্ত খাদ্য বিদেশে রপ্তানি করছে। অথচ কৃষি উৎপাদনের জন্যে তার জমির পরিমাণ অত্যন্ত কম, মাথাপিছু মাত্র এক একরের চার ভাগের এক ভাগ। তাও প্রতি বছর কমে যাচ্ছে, শিল্প ইত্যাদি উন্নয়ন কাজে। শাক-সবজি, ফল-মূল এবং মাছ-মাংস ইত্যাদি সবকিছুর উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। সত্যিকার সবুজ বিপ্লব যাকে বলে।
কেবল কৃষিতে নয়, বাংলাদেশ শিল্পের ক্ষেত্রেও অনেক এগিয়ে গেছে। স্বাধীনতা লাভের সময় বাংলাদেশে শিল্প বলতে ছিল কয়েকটি পাটের কল, একটি কাগজের কল আর কয়টি চিনির কারখানা। এখন ইস্পাত কারখানা-সহ নানা ধরনের শিল্পের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। ওষুধের কারখানা, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক শিল্পেরও বিকাশ ঘটেছে। এমনি, বিকাশ ঘটছে সর্বত্র, সবকিছুতে।