দক্ষিণ এশিয়ায় যেহেতু একমাত্র ভারতই করোনা ভ্যাকসিন তৈরি করছে, তাই প্রথম দিকেই এ অঞ্চলের সব দেশে ভ্যাকসিন সরবরাহের উদ্যোগ নেয় নরেন্দ্র মোদি সরকার। ইতোমধ্যে সব দেশে ভারতের ভ্যাকসিন ধাপে ধাপে পৌঁছাতে শুরু করেছে। উল্লেখ্য, প্রস্তাব দেয়া সত্ত্বেও ভারতের ভ্যাকসিন পাকিস্তান গ্রহণ করেনি। বৈশ্বিক শক্তির স্বীকৃতি পেতে হলে ভারতকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। তাই ২০১৪ সাল থেকে পাকিস্তানসহ এ অঞ্চলের সব দেশ; মধ্যপ্রাচ্য এবং অন্যান্য দেশের সরকার ও জনগণের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। সৌদি আরব, ইরানসহ পৃথিবীর প্রায় সব মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের সঙ্গে গত কয়েক বছরে ভারতের সম্পর্ক নতুন মাত্রায় উন্নিত হয়েছে। স্ট্র্যাটেজিক্যালি গুরুত্বপূর্ণ ইরানের চবাহার সমুদ্রবন্দরে বড় আকারের বিনিয়োগ করছে ভারত, যার মাধ্যমে ইরান-আফগানিস্তান হয়ে মধ্য এশিয়ার বিপুল সম্পদশালী দেশসমূহ এবং রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের কানেকটিভিটি অনেক সহজ, নিরাপদ ও নিশ্চিত হবে। চবাহার বন্দরের সঙ্গে বাংলাদেশেরও যুক্ত হওয়ার সুযোগ আছে। তাতে আগামী দিনে মধ্যপ্রাচ্যের বিকল্প হিসেবে মধ্য এশিয়ার জ্বালানিসম্পদ সহজে কম সময় ও খরচে বাংলাদেশ আমদানি করতে পারবে।
বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক পর্যায়ে ভারত-বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগের অনেক ক্ষেত্র রয়েছে। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় প্রথম সারিতে আছে ভারত ও বাংলাদেশ। সাইক্লোন ও সুনামির ভয়াবহতার প্রতিরক্ষায় দুই দেশের উপকূলজুড়ে অবস্থিত সুন্দরবনকে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য যৌথ উদ্যোগ ব্যতিরেকে সুফল পাওয়া যাবে না। দুই দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে নিরবচ্ছিন্ন ও বহমান রাখতে হলে নিরাপত্তা ও সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলোকে আরো সমন্বিত ও সম্প্রসারিত করার অনেক সুযোগ রয়েছে। সামরিক সরঞ্জামাদির সাপ্লাই সোর্স বহুমুখী করা প্রয়োজন, যার সহজলভ্য একটা দেশ হতে পারে ভারত।