ডোমার উপজেলা শহরের একটা কাঠগোলায় খড়ি কাটছিলেন তিনি। ‘সিনিয়াল দা’, বলে তাকে ডাকলাম আমি। ডাক শুনে মোটা দুটি কাঁচা-পাকা ভ্রু কুঁচকে কোটরাগত চোখ তুলে এক মুহূর্ত তাকিয়ে আবার কাজে মন দিলেন। তিনি ১৯৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধা নৃপেন্দ্রনাথ রায় ওরফে সিনিয়াল।
নীলফামারী শহরকে পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত করে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম যে দলটি শহরে ঢুকেছিল, তাদের মধ্য একজন সিনিয়াল। মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় তালিকায় তার নাম থাকলেও তিনি মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাই সত্তর বছর বয়সেও ছানিপড়া চোখে, বাঁকানো কোমর নিয়ে তিনি কাঠগোলায় খড়ি কেটে দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।
২০০৮ সালে জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য সংগ্রহকারীদের গাফিলতিতে তার নামের প্রথম অংশ নৃপেন্দ্রনাথ রায় বাদ দিয়ে শুধু সিনিয়াল লেখা হয়। ভুল হয় তার জন্মতারিখও। অনেক ঘুরাঘুরি করেও তিনি জাতীয় পরিচয় পত্রে নাম ও জন্মতারিখ সংশোধন করতে পারেননি। এই ভুলের কারণেই বীর মুক্তিযোদ্ধা নৃপেন্দ্রনাথ রায়কে কাটাতে হচ্ছে মানবেতর জীবন।