অপরদিকে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের যে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের বিস্তার ঘটেছে, সে ক্ষেত্রে এই ফেনী মৈত্রী সেতু এক আলাদা গুরুত্ব পাবে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি দক্ষিণ এশিয়ার কাছে এর গ্রহণযোগ্যতাকে বাড়িয়ে দিয়েছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতি বাংলাদেশকে এক স্বতন্ত্র জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং বৈশ্বিক টেক্সটাইল শিল্পের এক নেতা হিসেবে অনন্য জায়গায় স্থান দিয়েছে। বাংলাদেশ দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। আর তাই দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে কানেক্টিভিটির কেন্দ্র হিসেবে এর অবস্থানগত সুবিধা সর্বাধিক করতে প্রস্তুত বাংলাদেশ। সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই ট্রানজিটের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। আর তাই ভারত সরকারের কাছেও বাংলাদেশ আলাদা ট্রানজিট সুবিধা চেয়েছে নেপাল ও ভুটানে পণ্য সরবরাহের জন্য। ইতোমধ্যে এ বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ থেকে নেপালে ট্রানজিট সুবিধা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভারত সরকার। বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার রহনপুর ও ভারতের সিঙ্গাবাদ রেলপথ দিয়ে বাংলাদেশ থেকে নেপালে সার রপ্তানিতে এ ট্রানজিট সুবিধা দিয়েছে ভারত। তবে এই ট্রানজিটকে আরো সম্প্রসারণ করতে চাইছে বাংলাদেশ। কিছুদিন আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ভারত, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড হাইওয়েতে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির আনুষ্ঠানিক অনুরোধসংবলিত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর একটি চিঠি হস্তান্তর করেন পররাষ্ট্রসচিব। এ ছাড়া বাংলাদেশ সরকার বিদ্যুৎ-বাণিজ্যের বিষয়টি নতুন করে ভাবছে। যেহেতু বিদ্যুৎ-সক্ষমতা বাড়ছে, বড় বড় প্লান্ট উৎপাদনে যাচ্ছে এবং শীঘ্রই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে যাবে, তাই সরকার আগে থেকেই বিদ্যুৎ-বাণিজ্যের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। বিদ্যুৎ-বাণিজ্যের জন্য বাংলাদেশ নেপালকে টার্গেটে রেখেও ভারতের মাটি ব্যবহার করতে চাইছে। আর এ ক্ষেত্রে সবেচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে নবনির্মিত এই ফেনী মৈত্রী সেতু।