বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের ভিত্তি ভাষা, অভিন্ন সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য এবং সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধ, যা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে রক্তস্রোতে আরও দৃঢ় ভিত্তি পেয়েছে। আর এই ভিত্তির রূপকার বাঙালির ইতিহাসের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক ইন্দিরা গান্ধী। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে বাংলাদেশ ও ভারত সুখে-দুঃখে পরস্পরের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ নামে জাতিরাষ্ট্রের মহান স্থপতি, অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে অটটু বন্ধনেরও পথনির্দেশক।
গণতান্ত্রিক দর্শন ও আদর্শিক বাস্তবতা দুদেশের সম্পর্কের মৌলিক ভিত্তি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ৩০ লাখ শহিদের আত্মদান এবং অসংখ্য মা-বোনের সম্ভ্রম হারানোর মধ্যদিয়ে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পাকিস্তানকে পরাজিত করার মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান করে নিয়েছিল। স্বাধীনতাযুদ্ধে বঙ্গবন্ধু প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসাবে ভারত এবং ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে পাশে পেয়েছিলেন। ভারত বাংলাদেশের প্রায় এক কোটিরও বেশি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছিল, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিল। স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতের অনেক সৈনিক প্রাণ দিয়েছিল এবং আহত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর মুক্তি এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বীকৃতির পক্ষে বিশ্বজনমত গঠন করতে ইন্দিরা গান্ধী প্রায় ৩০টি দেশ সফর করে একদিকে সরকারপ্রধানদের সঙ্গে আলোচনায় মিলিত হন, অন্যদিকে সাধারণ মানুষের মধ্যেও সহানুভূতি গড়ে তুলতে চেষ্টা করেন।