শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের মানিকপুর গ্রামে মা–বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়। এ সময় প্রিয় নেতাকে শেষবিদায় জানাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেক নেতা-কর্মী ও স্বজনেরা।
এর আগে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে গ্রামের বাড়ির সামনের মাঠে ষষ্ঠ এবং শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে আরও দুটি জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে কোম্পানীগঞ্জের সরকারি মুজিব কলেজমাঠে বিকেল সোয়া পাঁচটায় এবং কবিরহাট সরকারি কলেজমাঠে বিকেল সাড়ে তিনটায়। প্রতি জানাজাতেই ছিল দলমত–নির্বিশেষে মানুষের ঢল। সরকারি মুজিব কলেজমাঠে জানাজার আগে প্রয়াত মওদুদ আহমদকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মওদুদ আহমদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে সর্বস্তরের জনগণ। আজ শুক্রবার সকাল ৯টা ১৫ মিনিটের দিকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মওদুদ আহমদের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়।
এরপর বিএনপি, নাগরিক ঐক্য, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), এনডিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ মওদুদ আহমদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানায়।
শ্রদ্ধা জানানোর পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, মওদুদ আহমদ সারা জীবন একজন সংগ্রামী নেতা ছিলেন। গণতন্ত্রের জন্য লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছেন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সরকারে থেকে দেশ ও জাতির কল্যাণের জন্য অবদান রেখেছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মওদুদ আহমদের মরদেহ ঢাকায় পৌঁছেছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে আসার পর বিমানবন্দর থেকে মরদেহ নেওয়া হয়েছে তাঁর গুলশানের বাড়িতে। কাল তাঁকে জন্মস্থান নোয়াখালীতে দাফন করা হবে।
ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মরদেহ পৌঁছানোর পর আনুষ্ঠানিকতা শেষে তা গ্রহণ করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। এ সময় আবেগাপ্লুত মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের এই সংকটময় মুহূর্তে, গণতন্ত্রের সংকটকালে তাঁর (মওদুদ আহমদ) চলে যাওয়া দেশের জন্য, বিএনপির জন্য বড় ক্ষতি হয়েছে, তা কখনো পূরণ হওয়ার নয়। তাঁর মতো মানুষ খুব কম আসেন।
নোয়াখালী অঞ্চলের শিল্পোদ্যোক্তারা বলছেন, দেশের রাজনীতিতে মওদুদ আহমদ কখনো নন্দিত, কখনো নিন্দিত ছিলেন। কিন্তু কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও শিল্প প্রতিষ্ঠায় তার ভূমিকা ছিল দলমতের ঊর্ধ্বে। নোয়াখালী অঞ্চল ছাড়াও দেশের যেকোনো শিল্পোদ্যোক্তার বিপদ-আপদে মওদুদ আহমদ ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন। কোনো একটি সূত্র ধরে তার কাছে উপস্থিত হতে পারলেই শিল্পোদ্যোক্তারা তড়িৎ গতিতে সেটির সমাধান পেয়েছেন।
নোয়াখালীর কৃতি সন্তান ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের মৃত্যুতে তিনদিনের শোক ঘোষণা করেছে বসুরহাট পৌরসভা। বুধবার (১৭ মার্চ) রাত ৯টায় বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা মওদুদের মৃত্যুতে তিনদিনের এই শোক ঘোষণা করেন।
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের মানিকপুর গ্রামে বাবা-মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হবে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ জাগো নিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বিএনপিতে। অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান, আইনজ্ঞ ও বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধার চলে যাওয়াকে দল ও জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে মন্তব্য করেছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মওদুদ আহমদ সারা দেশে একজন সম্মানীয় রাজনীতিবিদ ছিলেন। এই চলে যাওয়া জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। দেশের মানুষ একজন সত্যিকারের রাজনীতিবিদকে হারাল আজ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক মন্ত্রী, প্রবীণ আইনজীবী মওদুদ আহমদ মারা গেছেন। সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তার মৃত্যু হয় বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন।