তিস্তা নদীর ওপর প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে আমাদের দেশের কোটি কোটি মানুষ নির্ভরশীল। সেই বিবেচনায় এ নদীর প্রতি পর্যাপ্ত রাষ্ট্রীয় পরিচর্যা থাকার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা নেই বললেই চলে। ৪০ বছর আগেও নদীটি বাংলাদেশ অংশে বর্ষা মৌসুমে প্রস্থে ছিল ২ কিলোমিটার, শুষ্ক মৌসুমে ১ কিলোমিটার। অপরিকল্পিতভাবে নদী রক্ষা বাঁধ এবং ব্যারাজ নির্মাণের ফলে নদীটি এখন কোথাও কোথাও প্রস্থে প্রায় ১০ কিলোমিটার হয়েছে। নদীটি তার গভীরতা হারিয়েছে।
প্রতিবছর দুই পাড়ে যে হাজার হাজার হেক্টর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়, তা দিয়ে নদীর তলদেশ ভরাট হচ্ছে। উজান থেকে প্রচুর পরিমাণ বালু এসেও নদীর তলদেশ ক্রমেই স্ফীত হয়ে উঠছে। এখন কোথাও কোথাও নদীর তলদেশ সমতল ভূমির চেয়ে অনেক উঁচু।
তিস্তা যখন প্রস্থে ১ থেকে ২ কিলোমিটার ছিল, তখন পানির বেগ ছিল প্রচুর। সেই বেগে নদীর তলদেশ গভীর হতো। কৃত্রিমভাবে তিস্তার তলদেশ খনন করে অতীতে এর গভীরতা বৃদ্ধি করা হয়নি, গভীর হয়েছিল প্রাকৃতিকভাবেই। নদী রক্ষা বাঁধের নামে উৎসমুখ বন্ধ করে ঘাঘট-মানাস-বাইশাডারার মতো শাখা নদীগুলোকে তিস্তা থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে।