নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন আমাদের সমাজের পুরোনো বাস্তবতা। বৃক্ষের ওপর মৃত্যু পরোয়ানা জারিই রয়েছে। বনাঞ্চলের ভেতর করাতকল বসিয়ে অবৈধভাবে গাছ কেটে বনাঞ্চল উজাড় করা হচ্ছে- এমনসব খবর সংবাদমাধ্যমে নিকট অতীতেও প্রকাশিত-প্রচারিত হয়েছে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সমকালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- উজাড় হচ্ছে উপকূলের বন। পটুয়াখালী উপকূলের বনাঞ্চলের দিকে লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে স্থানীয় বনখেকোদের। অন্য উপকূলীয় অঞ্চলের চিত্রও প্রায় একই। অথচ আমরা জানি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বন রক্ষায় কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। বন বিভাগের একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অসাধু কাঠ ব্যবসায়ীদের যোগসাজশে সারাদেশে সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকেই শুধু নয়; বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, রাস্তার পাশে ও ব্যক্তিমালিকানাধীন গাছ কেটে সাবাড় করা হচ্ছে অবাধে। প্রকৃতি, পরিবেশ ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য বনজ সম্পদের গুরুত্ব অপরিসীম- এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। বাংলাদেশের প্রায় পাঁচ হাজার বর্গমাইল এলাকাজুড়ে বনাঞ্চল রয়েছে। এ বনাঞ্চল দেশের মোট জমির সাত ভাগ মাত্র। ভৌগোলিক সীমানা অনুপাতে দেশে বনাঞ্চলের পরিমাণ থাকার কথা ৩০ ভাগ। যেভাবে বৃক্ষনিধন ও বনাঞ্চল উজাড়ের খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে বনাঞ্চলের পরিমাণ সাত ভাগ আছে কিনা, সন্দেহ রয়েছে। প্রায় প্রতিবছরই আমাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হতে হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য বনাঞ্চল সম্প্রসারণ ছাড়া কোনো গত্যন্তর নেই। বনজ সম্পদের যথাযথ ব্যবহার ও সংরক্ষণের ওপর আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নও বহুলাংশে নির্ভর করে।