সিলেটে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, অবরোধ

মানবজমিন প্রকাশিত: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০০

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে অচল হয়ে পড়ে সিলেটের চৌহাট্টা ও আশেপাশের এলাকা। প্রায় দুই ঘণ্টা কোর্ট পয়েন্ট থেকে আম্বরখানা সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। এ সময় তীব্র যানজট দেখা দেয় নগরীতে। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে রাস্তা থেকে সরে দাঁড়ায় শিক্ষার্থীরা। তবে তারা বলেছে- দ্রুততম সময়ের মধ্যে দাবি মেনে না নিলে সিলেটে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলমান মাস্টার্সসহ সকল পরীক্ষার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে দ্রুত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ছাত্রাবাস খুলে দেয়ার জন্য কয়েকদিন ধরে সিলেটের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে আন্দোলন করছিল শিক্ষার্থীরা। গত দু’দিন সিলেট এমসি কলেজের ফটকে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে। এ সময় তাদের দাবি তুলে ধরে অধ্যক্ষ বরাবর স্মারকলিপিও পেশ করে। এর বাইরেও আরো কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা একই ভাবে কর্মসূচি পালন করে। কিন্তু তাদের দাবি মেনে না নেয়ায় গতকাল দুপুরে প্রথমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু করা হয়। এই কর্মসূচিতে যোগ দেয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এতে করে জিন্দাবাজার থেকে চৌহাট্টা সড়কের একাংশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। দেখা দেয় যানজটও। শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারের সামনে অবস্থান নিয়ে নানা স্লোগান দেয়। ‘জেগেছেরে জেগেছে- ছাত্রসমাজ জেগেছে, লেগেছেরে লেগেছে- রক্তে আগুন লেগেছে’ স্লোগানে মুখর হয়ে উঠে শহীদ মিনার এলাকা। এক পর্যায়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারের সামনে থেকে চৌহাট্টা মোড়ে অবস্থান নেয়। এতে করে চৌহাট্টা এলাকা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। প্রায় দেড় ঘণ্টা শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। খবর পেয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ- পুলিশ কমিশনার আজবাহার আলী শেখসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে যান। তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ সময় জানান, তাদের দাবি সংবলিত স্মারকলিপি ইতিমধ্যে তারা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের মারফতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়েছেন। এরপরও তাদের দাবির প্রতি তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। এ কারণে তারা রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন। কর্মসূচি পালনকালে ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী গোল বৃত্তবন্দি হয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এদিকে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপের কারণে বেলা দুইটার দিকে শিক্ষার্থীরা চৌহাট্টা এলাকা থেকে তাদের অবরোধ তুলে নেন। পরে তারা মিছিল সহকারে সিলেটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি পেশ করেন। শিক্ষার্থীরা জানান, ক্যাম্পাস না খোলার কারণে তারা হোস্টেলে উঠতে পারছেন না। আর বাসাবাড়িতেও তারা শিক্ষার্থী সংকটের কারণে মেসে থাকতে পারছেন না। এ কারণে নানা প্রতিবন্ধকতায় পড়েছেন তারা। নানা সমস্যা এবং সংকট কাটাতে এই মুহূর্তে তাদের আন্দোলনের বিকল্প নেই বলে জানান তারা। এমসি কলেজ গণিত বিভাগের মাস্টার্স পরীক্ষার্থী আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভে বক্তব্য রাখেন- নিন্টু মালাকার, দোয়েল রায়, শ্যামলী দাস, গোলাম কিবরিয়া, সৈয়দ আকমল হোসাইন, মোহাম্মদ হোসাইন, শাহ রোকনুজ্জামান রোখন, সৈকত ভৌমিক, তানজিনা বেগম, সাগর আহমদ, আব্দুল্লাহ আল তুহিন, একেএম জুমায়েল বক্স, মনিরা ইয়াছমিন, আব্দুল্লাহ আল শাহেদ, এনামুল ইমাম, উমা সরকার, আরএস শাওন, দেবল পাল, ফারজানা খানম জেবিন সহ আরো শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলেন, যেখানে সারা দেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা থেকে শুরু করে খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে দেশের শিক্ষাখাতকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা হচ্ছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানান। রাজধানীর শাহবাগ ও চট্টগ্রামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলা ও গ্রেপ্তারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবি করা হয়। আগামী ২৭শে ফেব্রুয়ারি শনিবারের মধ্যে তাদের দাবি না মানা হলে শনিবার বেলা ১১টায় সিলেট নগরীর চৌহাট্টা পয়েন্টে অবস্থান কর্মসূচি, প্রতীকী পরীক্ষা পালন করা হবে। এ ছাড়াও মানববন্ধন ও বিক্ষোভে এমসি কলেজ, দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজ, সিলেট সরকারি কলেজ, মদন মোহন কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, মঈন উদ্দিন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us