করোনার এই সময়ে ঢাকায় তালাক বা বিবাহবিচ্ছেদ বেড়ে গেছে। এ বছরের জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত পাঁচ মাসে ঢাকায় বিবাহবিচ্ছেদ আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে। এই সময়ে দৈনিক ৩৯টি তালাকের ঘটনা ঘটেছে, অর্থাৎ প্রতি ৩৭ মিনিটে একটি তালাক হয়েছে। বিবাহবিচ্ছেদ বেড়ে যাওয়ার পেছনে করোনার কারণের তৈরি হওয়া মানসিক, আর্থিকসহ নানামুখী চাপের পাশাপাশি পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন এবং যোগাযোগ কমে যাওয়াকে অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন সমাজবিজ্ঞানীরা।
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্তের কথা জানায় সরকার। এরপর ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ছিল। ছুটির মধ্যে এপ্রিল মাসে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে কোনো তালাকের আবেদন জমা পড়েনি। মে মাসেও তালাকের আবেদন কম ছিল। তবে জুন মাসে তালাকের আবেদন স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক বেড়ে যায়। জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরেও এই ধারা অব্যাহত ছিল। গত নভেম্বর মাসে ঠিক কতটি তালাকের আবেদন জমা পড়েছে, সে হিসাব এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। তবে দুই সিটির কর্মকর্তারা বলছেন, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে নভেম্বরেও আবেদনের সংখ্যা বেশি হবে। চাকরিজীবী স্বামী-স্ত্রীদের ক্ষেত্রে তালাকের ঘটনা বেশি ঘটছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিনাত হুদা প্রথম আলোকে বলেন, করোনার মতো এমন দুর্যোগপূর্ণ অভিজ্ঞতা নিকট অতীতে মানুষের ছিল না। করোনার কারণে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিকভাবে একধরনের চাপের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে প্রায় সবাইকে। এর ফলে মানুষের মধ্যে অসহিষ্ণুতা বেড়ে গেছে। মনস্তাত্ত্বিক এই চাপ দাম্পত্য কলহ ও সংকটকে প্রভাবিত করছে। পারিবারিক কলহের জেরে বেড়েছে বিচ্ছেদের ঘটনা।