হাঁটাচলা করতে পারেন না। কানে শোনেন না। মাথা, গা, হাত, পায়ে ঘা। বাড়ির দাওয়ায় বসে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন রাস্তার দিকে। তাঁর সম্পর্কে কিছু জানতে চাইলেই ক্ষোভ ঝরে পড়ে পরিজনের গলায়। ‘‘বিষ-জল শেষ করে দিল জীবনটা’’, আক্ষেপ করেন বছর ষাটের ফজলু মল্লিকের বাড়ির লোকজন।
শুধু ফজলু নন, পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী ২ ব্লকের কল্যাণপুর গ্রামে ‘আর্সেনিকোসিসে’ (আর্সেনিকঘটিত রোগ) অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানান এলাকাবাসী। বেশ কয়েক জনের মৃত্যুও হয়েছে বলে দাবি তাঁদের। আর্সেনিক-যুক্ত জল থেকে রেহাই দিতে গ্রামের অদূরে কোমলনগরে তৈরি হয়েছে জলপ্রকল্প। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সে প্রকল্পের জল জলাধার থেকে গ্রামে পৌঁছনোর ব্যবস্থা হয়নি। বহু আবেদনেও কাজ না হওয়ায় প্রকল্প থেকে জলাধারে যাওয়া পাইপ ফাটিয়ে তাঁদের জল নিতে হয়। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরও মানছে, প্রযুক্তিগত কারণে এখনও সরাসরি প্রকল্পের জল যায় না কল্যাণপুরে। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা অনুযায়ী, মানব-শরীরে আর্সেনিকের সহনশীলতার মাত্রা .০১ মিলিগ্রাম প্রতি লিটারে। তার বেশি আর্সেনিক শরীরে গেলে ত্বকের ক্যানসার, কেরাটোসিস, মেলানোসিস, ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসের মতো নানা রোগ হতে পারে।