নিউইয়র্ক থেকে হারুন-উর রশিদের সঙ্গে আমি ওয়াশিংটনের উদ্দেশে যাত্রা করলাম। ওয়াশিংটনে এ এম এ মুহিত আমাকে এয়ারপোর্টে রিসিভ করলেন। তিনি তখন ছিলেন পাকিস্তান দূতাবাসের ইকোনমিক মিনিস্টার, সে দিনই সন্ধ্যায় আমি ওয়াশিংটনের পাকিস্তান দূতাবাসের বাঙালি কর্মচারীদের সঙ্গে মিলিত হলাম। তাঁরা সবাই অভিজাত গোষ্ঠীর, যাঁদের নেতৃত্বে ছিলেন এনায়েত করিম, শামসুল কিবরিয়া—যাঁরা পরে পররাষ্ট্রসচিব হয়েছিলেন, ছিলেন অধ্যাপক আবু রুশদ মতীনউদ্দিন—তিনি তখন সেখানে শিক্ষাবিষয়ক অ্যাটাশে, ছিলেন মোয়াজ্জেম আলী, সম্ভবত তখন তিনি থার্ড সেক্রেটারি।
এ ছাড়া ছিলেন বেশ কয়েকজন নন-পিএফএস অফিসার, যেমন রুস্তম আলী, রাজ্জাক খান, শরিফুল আলম প্রমুখ। সে সময় তাঁদের কেউই বিদ্রোহ করেননি। তাঁরা সবাই বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রতি তাঁদের পরিপূর্ণ সহানুভূতি প্রকাশ করলেন। বলা দরকার, তাঁদের অনেকেই তখন গোপনে কংগ্রেস সদস্যদের সঙ্গে এবং স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলার জন্য। আমি তাঁদের কাছে দল ত্যাগ করার তাজউদ্দীন আহমদের মেসেজ পৌঁছে দিলাম। তাঁরা সবাই পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করার জন্য তখন প্রস্তুত ছিলেন, কিন্তু তাঁরা পরিপূর্ণ স্বাধীনতা অর্জনের জন্য জনগণের ত্যাগ সম্পর্কে তার আগে নিশ্চিত হতে চাইছিলেন।