জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন নামে আমাদের একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান আছে। নামেই বোঝা যায় এর দায়িত্ব কী। আর সে দায়িত্ব পালনে প্রতিষ্ঠানটি যে সফল হচ্ছে না, তা দেখা যায় সারা দেশের নদ–নদী, খাল–বিল ও অন্যান্য জলাশয় ক্রমে হ্রাস পাওয়ার বাস্তব চিত্র থেকে। সম্প্রতি এই কমিশন রাজধানী ঢাকার খালগুলোর অতীত–বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ৫৭ পৃষ্ঠার এক বিশদ প্রতিবেদন তৈরি করেছে, যাতে এই মহানগরের বুক থেকে অধিকাংশ খাল হারিয়ে যাওয়ার এক করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে।
ঢাকা মহানগরের ভূমি প্রশাসনের মোট ১১টি সার্কেলের মধ্যে ছয়টি সার্কেলের অতীতের ভূমি জরিপ, মানচিত্র ও অন্যান্য নথিপত্র বিশ্লেষণ করে নদী রক্ষা কমিশন মোট ৬৫টি খালের অস্তিত্ব চিহ্নিত করেছে। অনুমান করা যায় যে অবশিষ্ট পাঁচটি সার্কেলের অতীত ইতিহাস ঘেঁটে দেখলে নিশ্চয়ই আরও প্রায় সমানসংখ্যক খালের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে। অর্থাৎ আমাদের এই প্রিয় রাজধানীর বুকের ওপর দিয়ে একসময় বয়ে যেত শতাধিক খাল। এখানে চলাচল ও পণ্য পরিবহনের কাজে সেই খালগুলো ব্যবহৃত হতো; সেসব খাল বেয়ে বৃষ্টির পানি দ্রুত নেমে যেত বলে এই শহরে কখনো আজকের মতো জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতো না। তা ছাড়া নির্মল বাতাস, সুন্দর ও স্বস্তিকর প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে জলাভূমির যে অবদান, তার কথা তো বলাই বাহুল্য।