পুলিশের বিভিন্ন পদে পছন্দের ব্যক্তিকে নিয়োগ–বদলিতে প্রায়ই তদবির করতেন মন্ত্রী–সাংসদেরা। এখন পছন্দের চিকিৎসকদের নিজ এলাকায় আনতে বা পছন্দের জেলায় বদলি করতে আধা সরকারি পত্রও (ডিও লেটার) পাঠাচ্ছেন মন্ত্রী-সাংসদেরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগে বিশেষ কোনো কারণে এ ধরনের দু-একটি ডিও লেটার পাঠানো হতো, এখন প্রায়ই প্রভাবশালীদের কাছ থেকে তদবির আসছে। এমনও দেখা গেছে, যাঁদের জন্য তাঁরা সুপারিশ করছেন, তাঁদের কাছে ওই ব্যক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তাঁরা কার নামে সুপারিশ করেছেন, সেটাই মনে করতে পারছেন না।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি চাকরির নিয়ম অনুযায়ী, মন্ত্রণালয় যেখানে যাঁকে পদায়ন করবে, তাঁকে সেখানেই চাকরি করতে হবে। দু-একজনের ব্যাপার আলাদা হতে পারে। কেউ যদি বঞ্চিত হন, তাঁর ব্যাপারে অনুরোধ আসতেই পারে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা (ভিআইপি) যদি এভাবে ডিও লেটার পাঠিয়ে ফোন করে অনুরোধ করতে থাকেন, তদবির করতে থাকেন, তবে কাজের পরিধি খর্ব হয়। এসব কারণে ঠিক লোককে ঠিক জায়গায় দেওয়া যায় না।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ও নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের একরামুল করিম চৌধুরী নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শাহরিয়া শায়লা জাহানকে পদায়নের জন্য ‘জোর সুপারিশ’ করে গত ৭ অক্টোবর ডিও লেটার পাঠান। একরামুল করিম চৌধুরী নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি। তিনি ডিও লেটারে লিখেছেন, ‘হাসপাতালের বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কোমরব্যথায় ভুগছেন। তাঁর কোমরব্যথায় দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা প্রয়োজন। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম, শাহরিয়া শায়লা জাহান এই হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের চলতি দায়িত্ব নিতে ইচ্ছুক। তাই তাঁকে নোয়াখালী ২০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পদায়নের জোর সুপারিশ করছি।’ এই বিষয়ে একরামুল করিম চৌধুরীর বক্তব্য জানতে তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার কল ও খুদে বার্তা পাঠানো হয়। কিন্তু তিনি সাড়া দেননি।