আজকাল বাজার আগুন। তরিতরকারি, মাছ— এ সব হাতের বাইরে। তবে শিশুকন্যা বেশ সস্তায় বিকোচ্ছে। সম্প্রতি মেদিনীপুরের হরিজন পল্লিতে বাবা, মা আট মাসের শিশুসন্তানকে বিক্রি করলেন মাত্র চার হাজার টাকায়। লকডাউনের দারিদ্র বাবা, মা’কে বাধ্য করেছে অর্থের বিনিময়ে নিজের সন্তানের সওদা করতে, এমনই বলা হচ্ছে। গত জুন মাসেই পশ্চিম মেদিনীপুরে এই রকম আরও একটি ঘটনা কানে এসেছিল। পরিযায়ী শ্রমিক আর গৃহ পরিচারিকার আড়াই মাসের কন্যা বিক্রি হয়েছিল হাওড়ার এক দম্পতির কাছে। শিশুটি তাঁদের তৃতীয় সন্তান। জেলার ‘চাইল্ড লাইন’-এর কোঅর্ডিনেটর অবশ্য ঘটনাটি পর্যবেক্ষণ করে বলেছিলেন, শিশুটি পুত্রসন্তান হলে বিক্রি হয়ে যেত না।
গত সেপ্টেম্বরে অন্ধ্রপ্রদেশের এক মা তাঁর ষোলো মাসের হারানো সন্তানকে ফিরে পান। তাকে মাত্র তিন দিন বয়সে তার বাবা দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছিলেন। শিশুটি ছিল তাঁদের চতুর্থ সন্তান। তায় আবার মেয়ে। অভাবের তত্ত্ব যে খাটে না, তা নয়। বিশেষত লকডাউনের সময় নিম্নবিত্ত পরিবারগুলির নৌকা ছিল সত্যিই টলোমলো। প্রায় তেরো কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ ভাবেই কাজ হারিয়েছেন। এঁদের তিন-চতুর্থাংশ ক্ষুদ্র কারবারি বা দিনমজুর। কবে এঁরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন, জানা নেই। শিশুসন্তানের বিক্রি তাই বেড়েই চলেছে।