চাষিদের এখন ‘মড়ার উপরে খাঁড়ার ঘা’

মানবজমিন প্রকাশিত: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

বন্যার জল এখনো শুকাইনি। কয়েক দফা অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে সবজি ক্ষেত ও চিংড়ি ঘের তলিয়ে যাওয়ায় চাষিদের অবস্থা নাজুক। এ পরিস্থিতিতে ফের নতুন করে বন্যা শুরু হওয়ায় চাষিদের ক্ষত জায়গাটা সেরে ওঠার আগেই আবার ‘মড়ার উপড়ে এ যেন খাঁড়ার ঘা’। এমন প্রতিকূল আবহাওয়ায় বাগেরহাটের চিতলমারীতে হাজার হাজার চাষিরা চরম হতাশায় ভুগছেন। স্থানীয় চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পর পর কয়েক দফা বন্যা ও জোয়ারের পানিতে এখন সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে চাষিরা। এ পরিস্থিতিতে আবারো নতুন করে বন্যা শুরু হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে অবিরাম বর্ষণের পাশাপাশি এলাকার নদী ও খালে ব্যাপক পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। এতে চিংড়ি ঘের রক্ষা করতে চাষিরা নেটের দোকানে ভিড় জমাচ্ছে। নেটের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন ট্রাক ও পিকআপভ্যানে করে নেটের মজুত করছেন ব্যবসায়ীরা। ঘেরের পাড়ে নেট ও পাটা দিয়ে ঘের রক্ষা করার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন চাষিরা। পাশাপাশি এসব ঘেরের পাড়ের অধিকাংশ জমিতে শসা, করলা, লাউ, কুমড়াসহ আবাদকৃত সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত মাসের বন্যায় কোনো সবজি গাছ বেঁচে নেই। বর্তমানে চাষিরা নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য আগাম টমেটো লাগিয়েছেন। কিন্তু এবার সেটিও অতিবৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম দেখা দেয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন চাষিরা। চিতলমারী সদর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঘের রক্ষা করতে চাষিরা নেটের দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন। চাষিদের একমাত্র ভরসা চিংড়ি ঘের ও সবজি ক্ষেত রক্ষায় তারা মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এলাকার চিত্রা নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাখরগঞ্জ বাজারসহ ডুমুরিয়া, খড়িয়া, আরুলিয়া, রায়গ্রামসহ আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষের বাড়িঘর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার চরলাটিমা গ্রামের সবজি চাষি সুখময় বিশ্বাস জানান, অতিবৃষ্টিতে টমেটো ও পান সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি কোনোভাবেই পুষিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। এ ছাড়া খলিশাখালী গ্রামের বিনয় মজুমদার, খড়মখালী গ্রামের পরিমল মজুমদারসহ অনেক চাষি হতাশা প্রকাশ করে জানান, অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে তাদের চিংড়ি ঘেরসহ সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নেট-পাটা দিয়েও শেষ রক্ষা সম্ভব হচ্ছে না। বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও থেকে ঋণ গ্রহণ করে তারা চিংড়ি চাষ করেছেন। প্রায় প্রতিবছরই এভাবে বন্যায় তাদের চিংড়ি ঘের ভেসে যাওয়ায় সামনে বেঁচে থাকার কোনো অবলম্বন নেই বলে হতাশা ব্যক্ত করেন তারা।  শুরশাইল গ্রামের শান্তি মণ্ডল জানান, বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে তাদের বাড়ির আঙিনাসহ আশপাশে পানি জমে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। চিতলমারী সদর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ নিজাম উদ্দিন জানান, এ বছর অতিবৃষ্টির কারণে চাষিদের ক্ষতির সংখ্যা একটু বেশি হয়েছে। জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার ঋতুরাজ সরকার জানান, গত কয়েক দফা অতিবর্ষণে সবজি চাষিদের তুলনামূলক ভাবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নতুন করে আবার বন্যা দেখা দেয়ায় চাষিদের খুবই সমস্যায় ফেলেছে। আবহাওয়া পরিবর্তন হলে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা সম্ভব হবে।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us