কক্সবাজার জেলার টেকনাফ আসনের সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদি আবারও আলোচনায়। তাঁর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মহানগরীর ডবলমুরিং থানায় দুদকের দায়ের করা দুর্নীতির মামলার স্বাক্ষ্যগ্রহণে চট্টগ্রাম আদালতের সার্কিট বেঞ্চ কক্সবাজার আদালতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে চলছে এই আলোচনা। সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের গুরুত্ব সম্পর্কে বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারি মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন পারভেজ বৃহস্পতিবার সকালে তথ্যটি নিশ্চিত করে বলেন, দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে স্বাক্ষীরা আসতে না পারায় চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের সার্কিট বেঞ্চ কক্সবাজার আদালতে যাচ্ছেন। সেখানে ৬ সেপ্টেম্বর সারাদিন কক্সবাজার জেলা জজ আদালতে আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে দায়ের করা দূর্নীতির মামলাসহ মোট ১৭টি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ করবেন চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন। এর আগে শুক্রবার তারা কক্সবাজার আদালতে পৌছাবেন । এছাড়া বিচারিক কার্যক্রমে অংশ নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পিপি এডভোকেট কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলুসহ দুদকের তিন সদস্যের একটি দলও কক্সবাজার যাবেন বলে জানান তিনি।তিনি জানান, ২০০৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর দায়ের করা মামলাটির বাদী ছিলেন দুদকের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ। চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন এ মামলায় ৭৯ লাখ ৩৭ হাজার ৭৯৭ টাকা ১১ পয়সার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।কিন্তু সাক্ষীরা আসতে না পারার কারণে দুর্নীতির মামলাগুলো নিষ্পত্তিতে বছরের পর বছর লেগে যাচ্ছে। ফলে চট্টগ্রাম বিভাগের ৬ জেলায় পর্যায়ক্রমে সার্কিট বেঞ্চ গঠনের মাধ্যমে দুর্নীতির বিশেষ মামলাগুলোর বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক।যার আওতায় সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাসহ দুর্নীতির ১৭ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ করতে খোদ চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন ৬ সেপ্টেম্বর বসবেন কক্সবাজার জেলা জজ আদালতে। সেখানে দুর্নীতির ১৭ বিশেষ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ করতে স্থাপন করা হবে সার্কিট বেঞ্চ। সাক্ষ্যগ্রহণকালে কক্সবাজার জেলা জজ আদালতে থাকবে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সকলকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে ইতোমধ্যে।সার্কিট টিমের অন্য সদস্যরা হলেন, রেকর্ড সহকারি মোহাম্মদ মুছা, অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর মোহাম্মদ আলী আকবর, অফিস সহায়ক মোহাম্মদ আবুল কাশেম, গানম্যান মোহাম্মদ সোহাগ মিয়া ও গাড়ী চালক মোহাম্মদ ফারুখ হোসেন।সার্কিট বেঞ্চ পরিচালনার বিষয়টি অনুলিপি আকারে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলসহ সংশ্লিষ্টদেরকে জানানো হয়েছে। কক্সবাজারে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা শেষে ৭ সেপ্টেম্বর সার্কিট বেঞ্চ টিম চট্টগ্রামে ফিরবে।এদিকে ইয়াবাকান্ডে আলোচিত-সমালোচিত সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির দুর্নীতি মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে। দুর্নীতির আরেকটি মামলায় তিনি গত বছর বিচারিক কার্যক্রমে অংশ নেয়ার জন্য চট্টগ্রাম আদালতে উপস্থিত হয়েছিলেন। ওই আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক হিসেবে চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন এবার সার্কিট বেঞ্চ টিম নিয়ে বদির নিজ জেলা কক্সবাজারেই যাচ্ছেন। এ নিয়ে বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে আদালত পাড়ায়।প্রসঙ্গত, জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বেও রয়েছেন। এ আদালতের বিচারক বছরের বিভিন্ন সময় চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার, রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, ফেনী ও লক্ষীপুর জেলায় পর্যায়ক্রমে সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট জেলার দুর্নীতির বিশেষ মামলাগুলোর বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন।