কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় পতিত জমিতে আউশ জাতের ধানের আবাদ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন কৃষকেরা। বাজার দরও ভালো পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। বোরো ও রোপা আমনের মধ্যবর্তী সময়ে বেশির ভাগ জমিই পতিত থাকতো। এসব পতিত জমিতে আউশ ধানের আবাদ করে কম খরচে অধিক লাভবান হয়েছেন এখানকার কৃষকেরা।কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, সরকারের প্রণোদনা কর্মসূচি, রাজস্ব ও প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের প্রদর্শনী বাস্তবায়নের মাধ্যমে এবার আউশের আবাদ বেড়েছে। এ বছর বাজার মূল্য ভালো পাওয়ায় কৃষকরাও খুশি। আউশ মৌসুমের জন্য ধান গবেষণা থেকে বের হয়েছে স্বল্প জীবনকালীন উচ্চ ফলনশীল জাত। এরমধ্যে নতুন জাত ব্রি ধান-৮৫ যা আউশ মৌসুমে কৃষক পর্যায়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। চলতি বছর এ উপজেলায় আউশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল তিন হাজার ৭৭০ হেক্টর। অর্জিত হয়েছে চার হাজার ৬৬০ হেক্টর। বাজারেও অন্যান্য মৌসুমের মতো ধান ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। উপজেলার দাওরাইট গ্রামের রাস্তা সংলগ্ন প্রায় ৩০ বিঘা জমি প্রতিবছর আউশ মৌসুমে পতিত থাকতো। কিন্তু পতিত থাকা এই ৩০ বিঘা জমিতে আউশের আবাদ হয়েছে। দাওরাইট গ্রামের ইসমাইল হোসেন জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে এবার আউশ ধানের আবাদ করেছেন। দুই বিঘা জমিতে ধান পেয়েছেন ৩২ থেকে ৩৪ মণ। এতে তার খরচ হয়েছে ১২ হাজার টাকা। খরচ বাদে ধান বিক্রি করে তিনি লাভবান হবেন বলে জানিয়েছেন। একই গ্রামের কৃষক মো. রমজান আলী জানান, এ বছর আউশ ব্রি ধান-৮৫ আবাদ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। জমি পতিত না রেখে এখন থেকে এ মৌসুমে আউশের আবাদ করবো। এ জাতের ধান আবাদে শ্রমিক, সেচ ও বালাইনাশক খরচ খুবই কম হয়। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ হামিমুল হক সোহাগ বলেন, আউশ আবাদ বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের আউশ মৌসুম শুরুর পূর্বেই পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। যেন সময়মতো আউশ ধানের বীজতলা তৈরি করা হয়। বোরো ধান কর্তনের পরপরই আউশ ধান রোপণ শুরু করা যায়। আউশ ধান কর্তন করে আমন রোপণ করা যায়। এ ছাড়া ধানে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ রোধে পার্চিং, লাইফ পার্চিং ও সম্প্রতি উদ্ভাবিত ওয়াইএসবি লিউর ব্যবহার করে ফেরোমন ফাঁদ স্থাপন করা হয়। এ সমস্ত প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে কৃষকদের উৎপাদন খরচ কমেছে। ফলশ্রুতিতে কৃষক আউশ ধান আবাদ করে লাভবান হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাইফুল হাসান আলামিন মানবজমিনকে বলেন, পতিত জমিতে আউশ জাতের ধান আবাদ করে ভালো ফলন পেয়েছেন কৃষকরা। বাজার দরও ভালো পাওয়ায় কৃষকদের মাঝে এ জাতের ধান চাষে আগ্রহ বাড়ছে।