ভাড়া করোনাকালের যাত্রী আগের মতোই

মানবজমিন প্রকাশিত: ১৮ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

করোনা পরিস্থিতিতে ৬০ ভাগ ভাড়া বাড়িয়ে গণপরিবহন চালু করা হয়েছিল। শর্ত ছিল প্রতি দুই সিটে শুধুমাত্র একজন করে যাত্রী নেয়ার। সঙ্গে চালক ও হেলপারের মাস্ক পরিধান করা। মাস্ক ছাড়া যাত্রী না তোলা। স্যানিটাইজার ছিটানো। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। শর্ত মেনে গণপরিবহন চালুর প্রথম দিন থেকেই স্বাস্থ্যবিধির একটি শর্তও মানেনি চালক ও হেলপাররা। পরেননি মাস্ক। স্যানিটাইজার সেটা কি জিনিস চিনেই না অনেক চালক ও হেলপার। সেই সঙ্গে তোলা হচ্ছে বাস বোঝাই যাত্রী। পাশাপাশি আদায় করা হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়াও। তাতে করোনা সংক্রমণের শঙ্কা যেমন থেকে যাচ্ছে, তেমনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যাত্রী সাধারণ। আর লাভবান হচ্ছে গণপরিবহনের। এ নিয়ে প্রশাসনেরও কঠোর কোনো পদক্ষেপ নেই। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে চট্টগ্রামের যাত্রী সাধারণের মাঝে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ গণমাধ্যমের কাছে ভাড়া কমানোর আকুতি জানাচ্ছেন তারা। সোমবার চট্টগ্রাম মহানগরীর ১০ নং রুটে চলাচলকারী একটি বাসে (চট্ট-মেট্রো-জ, ১১-১৮৭১) দ্বিগুণ ভাড়ার প্রতিবাদ করে বাসের হেলপারের কাছে নাজেহাল হন বেশ কয়েকজন যাত্রী। এ সময় চট্টগ্রাম বন্দরে কর্মরত সুফিয়া খানম নামে এক নারী যাত্রীকে চলন্ত বাস থেকে নেমে যেতে বলেন হেলপার। শুধু তাই নয়, বাসটিতে থাকা বেশ কয়েকজন পুরুষ যাত্রীর সঙ্গেও ভাড়া ও অধিক যাত্রী তোলা নিয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পরে হেলপার। পরে যাত্রীদের অভিযোগে নগরীর চৌমুহনী মোড়ে বাসটিকে আটকায় ট্রাফিক পুলিশ। এ সময় যাত্রীরা গণপরিবহনের এ নৈরাজ্য নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে ভাড়া পূর্বের মতো করার আবেদন করেন। লোকমান হাকিম নামে এক যাত্রী বলেন, সরকার দেশের জনগণের কথা চিন্তা করে ও করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে গণপরিবহনে প্রতি দুই সিটে একজন করে যাত্রী বসানোর নির্দেশ দেন। এ জন্য ৬০ শতাংশ ভাড়াও বৃদ্ধি করা হয়। তবে চট্টগ্রামের গণপরিবহনগুলো সরকারি নির্দেশনা না মেনে অধিক যাত্রী তুলছে। ভাড়াও নিচ্ছে দ্বিগুণ। আর এ নিয়ে প্রশ্ন করলে বাস থেকে নেমে যেতে বলেন তারা। তিনি বলেন, গণপরিবহনে যেহেতু আগের মতোই যাত্রী তুলছে সেক্ষেত্রে জনগণের পকেটের কথা চিন্তা করে ভাড়া আগের মতো করা হোক। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, দেশের কোনো গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। যে সব শর্ত অনুসরণ করে বর্ধিত ভাড়া আদায়ের কথা বলা হয়েছিল তা মানা হচ্ছে না। আগের মতোই গাদাগাদি করে যাত্রী বহন করা হচ্ছে। আবার এই করোনাকালীন ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য সরকারের বর্ধিত ৬০ শতাংশ ভাড়ার চেয়েও বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে অধিকাংশ রুটে। এতে করোনা সংকটে কর্মহীন ও আয় কমে যাওয়া সাধারণ মানুষের যাতায়াত দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন বাস মালিক গ্রুপের মহাসচিব বেলায়েত হোসেন বেলালও। তিনি বলেন, কতিপয় চালক ও হেলপার এই কাজটি করছেন। যেটি খুবই দুঃখজনক। তারা বুঝতে পারছেন না স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে নিজেরাও করোনা সংক্রমিত হতে পারেন। তাদের নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। টাকার জন্য তারা উন্মাদ হয়ে গেছেন। তিনি বলেন, যেহেতু তাদের নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না, সেহেতু সরকারের উচিত ভাড়া স্বাভাবিক করে দেয়া। অথবা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করা। কারণ দ্বিগুণ ভাড়া দেয়ার পরেও এখন যাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।  গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি না মানার বিষয়টি স্বীকার করেছেন চট্টগ্রাম বিআরটিএতে দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নূর-এ-জামান। তিনি বলেন, বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করার বিষয়টির সত্যতা পেয়েছি। দ্বিগুণ ভাড়া আদায়সহ স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করায় তাদের জরিমানা সহ আটকও করেছি। কিন্তু বিশৃঙ্খলা ঠেকানো যাচ্ছে না। এটি নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে মাঠ পর্যায়ে ট্রাফিক পুলিশকে আরো কঠোর হতে হবে। অন্যথায় গণপরিবহনের এই আইন অমান্যের স্রোত ঠেকানো যাবে না। ভাড়া কমানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ভাড়া আগের মতো করার যে দাবি তুলেছেন যাত্রীরা তা এখনো লিখিত আকারে কোথাও জানাননি। তাছাড়া এটি কেবিনেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাড়ানো হয়েছে। কমাতে হলেও কেবিনেটের সিদ্ধান্ত লাগবে। তবুও যে কারণে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে তা নিশ্চিত করতে বিআরটিএ চেষ্টা করে যাচ্ছে। নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে দেশের প্রতিটি জেলায়। এদিকে চট্টগ্রামে গণপরিবহনের স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করা ঠেকাতে দ্রুত আরো কঠোর হবে বলে জানিয়েছেন সিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। নগর পুলিশের ট্রাফিক কমিশনার হিসেবে সদ্য দায়িত্ব পাওয়া অতিরিক্ত কমিশনার শ্যামল কুমার নাথ এ প্রসঙ্গে বলেন, এ বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশদের ইতিমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us