.tdi_2_f3f.td-a-rec-img{text-align:left}.tdi_2_f3f.td-a-rec-img img{margin:0 auto 0 0} (adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});বিশাল এলাকা জুড়ে নির্বিচারে পাহাড় কেটে নির্মাণ করা হয়েছে বসতি। নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন ও হাটহাজারী ভূমি সার্কেলের জালালাবাদ মৌজায় মাদ্রাসার নামে সরকারি জমি দখল করে চলছে প্লট ব্যবসাও। অভিযোগ রয়েছে, মাওলানা হাফেজ মো. তৈয়ব জালালাবাদ তালিমুল কোরআন মাদ্রাসার নামে মাদ্রাসা গড়ার আড়ালে সরকারি খাস জমি দখল করে বিভিন্ন জনের কাছে বিক্রি করেছেন। হাটহাজারী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস বলছে, জালালাবাদ তালিমুল কোরআন মাদ্রাসার নামে সাড়ে ৬ একরের বেশি সরকারি খাস জমি দখল করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, বিশাল এলাকাজুড়ে দীর্ঘ সময় ধরে প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার বর্গফুট পাহাড় কেটে বসতি নির্মাণ করা হয়েছে। তবে জালালাবাদ তালিমুল কোরআন মাদ্রাসার কর্ণধার মাওলানা হাফেজ মো. তৈয়ব বলছেন, তাঁর নামে কোন জমি নেই। তিনি কোন পাহাড় কাটেননি। একটি গোষ্ঠী মাদ্রাসার জায়গা দখলের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। জানা যায়, মাওলানা তৈয়বের মাদ্রাসাটি জালালাবাদের পাহাড়ে গড়ে উঠা শত শত অবৈধ বসতির একটি। বিগত কয়েক বছর ধরে সরকারি খাস জমি দখল করে, কোন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতিরেকে নির্বিচারে পাহাড় কেটে তৈরি করেছেন বসতি। দীর্ঘদিন ধরে লোকচক্ষুর আড়ালে থাকলেও কয়েকমাস আগে থেকে একটি অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের নজরে আসে নির্বিচারে পাহাড় কাটার বিষয়টি। প্রাথমিক পর্যায়ের তদন্তে কিছু ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড় কাটার অভিযোগ পেয়ে গত ৯ জুন শুনানী শেষে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মো. তৈয়বকে ৩২ লাখ টাকা জরিমানা করেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়। বর্তমানে বিষয়টি বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে আপিল শুনানি পর্যায়ে রয়েছে। এদিকে বিশাল এলাকা জুড়ে পাহাড় কাটার নজরে আসার পর যৌথভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও পাহাড় কাটার ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় উপজেলা ভূমি সার্কেল আলাদা আলাদা কমিটি গঠন করে। গত ২১ ও ২৬ জুলাই পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক ও দুই পরিদর্শকের সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত টিম পাহাড় কাটার বিষয়টি সরেজমিন পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করেন। একইসাথে হাটহাজারী উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার ও চিকনদণ্ডী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের দুই উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তার সমন্বয়ে তদন্ত টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সরকারি খাস খতিয়ানের জায়গা দখলের সত্যতা পান। এসময় জালালাবাদ তালিমুল কোরআন মাদ্রাসার ৭-৮জন শিক্ষকও উপস্থিত ছিলেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের তদন্ত টিম পৃথক পাঁচ অংশে প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার ঘনফুট পাহাড় কাটার প্রমাণ পান। একই সাথে পাহাড় কেটে পাহাড়ের গায়ে ঘর ও রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে পাহাড় ন্যাড়া করে গাছও লাগানো হয়েছে ওই এলাকায়। পরিবেশ অধিদপ্তরের তদন্ত টিম তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, জালালবাদ তালিমুল কোরআন মাদ্রাসার নামে ছাত্রাবাস নির্মাণ করা হয়েছে। পাহাড় কেটে বানানো হয়েছে বেশ কয়েকটি বসতিও। বসতি নির্মাণকৃত জায়গাগুলো মাওলানা তৈয়্যবের কাছ থেকে কিনেছেন বলেও বসতিতে বসবাসকারী লোকজন তদন্ত টিমকে জানিয়েছেন। অন্যদিকে হাটহাজারী ভূমি অফিসের তদন্ত টিম জালালাবাদ তালিমুল কোরআন মাদ্রাসা সরকারি খাস খতিয়ানের ৬ দশমিক ৫৩ একর জায়গা অবৈধভাবে দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছে বলে তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন। পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ জুলাই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা হাফেজ মো. তৈয়বকে শুনানীতে ডাকে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে আগে সময়ের আবেদন করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী শুনানীর জন্য আগামী ১৭ আগস্ট নির্ধারণ করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের তদন্ত টিমের প্রধান উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়গুলো নির্বিচারে কেটে মাদ্রাসা নির্মাণের আড়ালে বসতি নির্মাণ করা হয়েছে। এসব বসতি বিভিন্ন জনের কাছে বিনা দলিলে বিক্রিও করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে কিছু পাহাড়ের ভেজিটেটিভ লেয়ার কেটে ন্যাড়া করে ফেলা হয়েছে। ন্যাড়া করা এসব পাহাড়ে গাছ লাগানো হলেও বর্ষাকালে বৃষ্টির পানিতে ভিজে এসব পাহাড়ে ধস নামতে পারে।’ অন্যদিকে হাটহাজারী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরীফ উল্যাহ দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘জালালাবাদ মৌজাটি চিকনদণ্ডী ভূমি অফিসের আওতায়। ওই মৌজায় বেশ কয়েকটি পাহাড়ে সরকারি খাস জমি দখল করে মাদ্রাসা নির্মাণসহ অবৈধ বসতি নির্মাণ করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর ও ভূমি অফিসের টিম যৌথভাবে তদন্ত করে সবমিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৬ একরের বেশি সরকারি জমি অবৈধভাবে দখলের প্রমাণ পান। আমরা সরকারি জমি অবৈধভাবে দখলের বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। যারা অবৈধ দখলের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের পরিচালক মো. নূরুল্লাহ নূরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘জালালাবাদ তালিমুল কোরআন মাদ্রাসার নামে নির্বিচারে পাহাড় কেটে পরিবেশ ও প্রতিবেশের বিরাট ক্ষতি করা হয়েছে। এখানে পাহাড় কেটে প্লট বানিয়ে বিক্রিও করা হয়েছে। আমাদের এক উপ-পরিচালকের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি ও ভূমি অফিসের তদন্ত কমিটি আলাদাভাবে প্রতিবেদন দিয়েছেন। আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরে বিষয়টি প্রতিবেদন আকারে জানিয়েছি। পাহাড় কাটার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে নোটিশ করা হয়েছে। মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সময় চেয়েছেন। আমরা আগামী ১৭ আগস্ট পরবর্তী শুনানীর জন্য রেখেছি।’ পাহাড় কাটা ও সরকারি খাস জমি দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে জালালাবাদ তালিমুল কোরআন মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা হাফেজ মো. তৈয়ব সম্প্রতি দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘আমার নিজের নামে এক টুকরো জায়গাও নেই। ওখানে একজন লেয়াকত চেয়ারম্যান আছে, উনি আমাদের মাদ্রাসার জায়গাটি দিচ্ছে না। জালালাবাদের জায়গাটি আমরা দুইজনে যৌথভাবে পাওয়ার নিয়েছি। উনি এখন জায়গাটি মাদ্রাসার নামে দিচ্ছেন না। উনি আমাদের বিপদে ফেলছেন।’ তিনি বলেন, ‘ওখানে ২০ বছর আগের পাহাড় কাটা। আমি হাফেজ তৈয়ব পাহাড় কাটার লোক নই। মাদ্রাসাটি হয়েছে ২০ বছর আগে। জালালাবাদ মাদ্রাসায় মেয়রসহ প্রশাসনের অনেক লোকও বিভিন্ন সময় গিয়েছেন। আমি নিজে জায়গা জমির হিসেবও বুঝি না। একটি সিন্ডিকেট করে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’.tdi_3_358.td-a-rec-img{text-align:left}.tdi_3_358.td-a-rec-img img{margin:0 auto 0 0} (adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});