ওসি প্রদীপের সম্পদ ও লিয়াকতকাণ্ডে হতবাক গ্রামবাসী

মানবজমিন প্রকাশিত: ০৯ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় কারাগারে থাকা ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীর বাড়ি চট্টগ্রামে পাশাপাশি দুই উপজেলায়। প্রদীপ বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নে উত্তর কুঞ্জরী গ্রামের মৃত হরেন্দ্র লাল দাশের ছেলে। আর লিয়াকত পটিয়া উপজেলার হাবিলাসন্দ্বীপ ইউনিয়নের পূর্ব সামারোপাড়া গ্রামের সাহাব মিয়ার ছেলে। এ দুইজনের মধ্যে ওসি প্রদীপের অঢেল সম্পদ ও মোহাম্মদ লিয়াকতের কর্মকাণ্ডে হতবাক গ্রামবাসী। গ্রামবাসীরা জানায়, ওসি প্রদীপের বাবা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা প্রহরী ছিলেন। তার দুই সংসারে পাঁচ ছেলে ও ছয় মেয়ে। ভাইদের মধ্যে প্রদীপ চতুর্থ। প্রদীপের দুই ভাইয়ের মাঝে সদীপও  পুলিশ পরিদর্শক। আর দীলিপ চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। তাঁদের মায়ের নাম জুগল রানী দাশ। গ্রামে ওসি প্রদীপ কুমার দাশের একতলা ভবন বাড়ি। সেখানে তাঁর সৎভাইয়েরা থাকেন। দুই সন্তান ও স্ত্রীসহ প্রদীপ বাস করেন চট্টগ্রাম নগরীর ফিরিঙ্গিবাজার এলাকার একটি বাসায়। বর্তমানে কর্মসূত্রে প্রদীপ টেকনাফে বাস করেন। মাঝে-মধ্যে নগরীতে আসতেন। কয়েকজন গ্রামবাসী জানিয়েছেন, প্রদীপের স্ত্রী চুমকি কারণের নামে গ্রামে তিনটি বড় দীঘি রয়েছে। আয়তন কমপক্ষে ২০ একর। এ ছাড়া আনুমানিক ১০ কোটি টাকার জমি কিনেছেন। গ্রামে ব্যবসা-বাণিজ্যও আছে। সবই স্ত্রীর নামে। তবে দেখাশোনা করেন তাঁদের ভাই রণজিত দাশ। এছাড়া স্ত্রীর নামে ১৫ বছর আগে চট্টগ্রামের পাথরঘাটায় দৃষ্টিনন্দন ৬তলা বাড়ি নির্মাণ করেন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। নগরীর মুরাদপুরেও কয়েক কোটি টাকা মূল্যের জমি রয়েছে ওসি প্রদীপের। তার বোনের প্রায় ১০ গন্ডা (২০ শতক) জায়গাও জবর দখল করেন তিনি। ১৯৯৬ সালে এসআই হিসেবে পুলিশে যোগ দেন প্রদীপ। পরে পদোন্নতি পেয়ে হন ওসি। ঘুরেফিরে পোস্টিং নিতেন শুধু সিএমপি আর কক্সবাজার জেলায়। এরমধ্যে ঘুষ দাবি সহ নানা অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত, প্রত্যাহার ও বদলি হয়েছেন একাধিকবার। কিন্তু সব সামলে ঠিকই বাগিয়ে নিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ থানার ওসি পদ। মাত্র ২৪ বছরে নামে বেনামে গড়েছেন অঢেল সমপদ।  চট্টগ্রামের সিনিয়র সাংবাদিক রতন কান্তি দেবাশিষ জানান, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের পাশাপাশি দেশের বাইরেও একাধিক বাড়ি আছে তার। আগরতলার গোহাটিতেও তার বাড়ি রয়েছে। এছাড়া আমেরিকাতেও তার বাড়ি আছে বলে শোনা যায়। যা দুদকের তদন্তেও প্রমাণ মিলেছে।  দুদক চট্টগ্রাম-১ সমন্বিত অঞ্চলের এক কর্মকর্তা বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদকের নোটিশ পেয়ে স্থাবর অস্থাবর সমপদের হিসাব জমা দিয়েছেন ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রী। প্রাথমিক অনুসন্ধানে স্ত্রীর নামে চট্টগ্রাম মহানগরে ৬তলা বাড়ি, প্লট, ফ্ল্যাট, একাধিক গাড়ি ও অন্যান্য সমপদের প্রমাণ পাওয়া যায়।  এদিকে পটিয়া উপজেলার হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের পূর্ব সামারোপাড়া গ্রামে পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ লিয়াকতের বাড়িতে সেমিপাকা টিনশেড ঘর। লিয়াকতের বাড়িটি তাঁর বাবার তৈরি করা। বাবা সাহাব মিয়া কিছুদিন আগে মারা গেছেন। লিয়াকতের মা জানান, লিয়াকত আলী হাবিলাসদ্বীপ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। হুলাইন ছালেহ নূর ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে অনার্সে ভর্তি হন চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে। শেষে এমবিএ করেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি থেকে। ১০ বছর আগে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেওয়া লিয়াকত আলী গত বছরের শেষের দিকে পরিদর্শক হিসেবে পদোন্নতি পান। তিনি সোয়াত টিমের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্য। সর্বশেষ কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে পরিদর্শক পদে পদোন্নতি পান। পদোন্নতির পর কক্সবাজার জেলা পুলিশে গিয়ে যোগদান করেন। গত ১৮ই জানুয়ারি বাহারছড়া পুলিশ ক্যামেপর ইনচার্জ হিসেবে যোগদান করেন।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us