দেশের আর্থিক খাতে সন্দেহজনক লেনদেনের পরিমাণ বাড়লেও সংখ্যা কমেছে ৩৮৬টি। সন্দেহজনক লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে অন্তত ১০০ কোটি টাকা। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়নের ঘটনা ১৬টি থেকে কমে ১০টিতে দাঁড়িয়েছে। তবে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন রোধ করতে পারায় দেশের আর্থিক খাতের সক্ষমতা আরো বেড়েছে।
রোববার রাতে প্রকাশিত বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের (বিএফআইইউ) ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আর্থিক খাতে ৫ হাজার ৩৬টি সন্দেহজনক লেনদেনের ঘটনা শনাক্ত করা হয়েছে। এগুলোর মাধ্যমে ১ হাজার ২২ কোটি টাকা সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এর আগের ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৫ হাজার ৪২২টি সন্দেহজনক লেনদেনের ঘটনা শনাক্ত হয়েছিল। এর মাধ্যমে সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছিল ৯২২ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের তুলনায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আর্থিক খাতে সন্দেহজনক লেনদেনের সংখ্যা কমেছে ৩৮৬টি। তবে সন্দেহজনক লেনদেনের সংখ্যা কমলেও টাকার পরিমাণ ১০০ কোটি বেড়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে প্রতিরোধে কেন্দ্রীয় বিএফআইইউ তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করেছে। ফলে এসব কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে আর্থিক খাতের সক্ষমতা বেড়েছে। এতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়নের ঘটনা কমে এসেছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়নের ঘটনা শনাক্ত করা হয়েছিল ১৬টি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা কমে ১০টিতে নেমে এসেছে। এই সময়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন শনাক্ত হওয়ার ঘটনা কমেছে ৬টি।
আর্থিক খাতে এমন সন্দেহজনক লেনদেন ও সন্দেহজনক কার্যক্রমের সংখ্যা ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ছিল ৩ হাজার ৮৭৮টি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা কমে ৩ হাজার ৫৭৩টি হয়েছে। এই সময়ে সন্দেহজনক লেনদেন ও সন্দেহজনক কার্যক্রম ব্যাংকে বেড়েছে। ব্যাংকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সন্দেহজনক লেনদেন ছিল ২ হাজার ৩৯৮টি। এর আগের ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ছিল ২ হাজার ১৮৯টি। লাইফ ইন্স্যুরেন্সগুলোতে আগে কোনো সন্দেহজনক লেনদেন ছিল না। তবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৪টি শনাক্ত হয়েছে। নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য খাতে কমেছে।
মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে সক্ষমতার বিষয়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জানুয়ারি থেকে জুন এ ৬ মাসে ৩ হাজার ৮৬৯টি শাখা মূল্যায়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৩টি শক্তিশালী, সন্তোষজনক মানে ছিল ২ হাজার ৩৫৩টি, ভালো মানের ছিল ১ হাজার ৪৫২টি এবং প্রান্তিক মানের ছিল ২১টি শাখা। একই সময়ে নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ৬৯টি শাখা মূল্যায়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে শক্তিশালী মানের কোনো শাখা পাওয়া যায়নি। সন্তোষজনক মানের পাওয়া গেছে ২৬টি, ভালো মানের ৩৫টি এবং প্রান্তিক মানের পাওয়া গেছে ৮টি শাখা।