ব্যাংকের শাখা সরেছে এক যুগ আগে, এখনও আটক আছে বন্দুকসহ বহু দলিল
প্রকাশিত: ০৫ জুলাই ২০২০, ০৮:০০
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় সোনালী ব্যাংক হরিখালী হাট শাখা স্থানান্তর হয়েছে এক যুগ আগে। কিন্তু, সেখানে ব্যাংকের একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও দুই হাজার কৃষকের জমির দলিলসহ মূল্যবান কাগজপত্র আটকে রাখা হয়েছে।
ওই এলাকায় ব্যাংকের একটি শাখার দাবিতে এলাকাবাসীরা এসব আনতে বাধা দিয়ে আসছেন। তবে এ কারণে গভীর সমস্যায় পড়েছে স্থানীয় হরিখালী উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাদের একটি ভবনের নিচতলা ভাড়া নিয়ে চলছিল ব্যাংকটির কার্যক্রম। ব্যাংক শাখা গুটিয়ে চলে গেলেও তাদের মামামাল সেখানে পড়ে থাকায় দীর্ঘ এক যুগ ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ না পাচ্ছে ভাড়া, না পারছে ওই ভবনে ক্লাস নিতে। ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক ১৯৭৯ সালে বগুড়ার সোনাতলার হরিখালীতে সোনালী ব্যাংকের শাখা প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেয়। তবে হরিখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে ভাড়া নেওয়া ওই শাখাতে দীর্ঘদিন লোকসান হচ্ছিল ব্যাংকটির। ফলে শাখাটি স্থানান্তর করে কর্তৃপক্ষ। ২০০৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর শাখাটি একই উপজেলার সৈয়দ আহাম্মদ কলেজ স্টেশনে স্থানান্তর করা হয়। এর এক বছর পর ২০০৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর সোনালী ব্যাংক সৈয়দ আহম্মদ কলেজ স্টেশন শাখার নামকরণ করে ব্যাংকটির কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়।
কিন্তু, স্থানান্তরের বিষয়টিকে সহজভাবে নেননি এলাকাবাসী। ওই স্থানে শাখার কার্যক্রম বহাল রাখার দাবিতে ব্যাংকটি স্থানান্তরের সময় তারা বাধা দেন। এ কারণে হরিখালীর ওই পুরাতন ভবন থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র, মূল্যবান কাগজপত্র ও দুই হাজার কৃষকের দলিল আনতে পারেনি ব্যাংকটির ওই শাখার তদানীন্তন কর্তৃপক্ষ। এরপর দীর্ঘ এক যুগ ধরেই এলাকাবাসীর বাধায় সেসব মালামাল ও দলিল ওভাবেই পড়ে রয়েছে। স্থানীয়রা এখন সেখানে সোনালী ব্যাংকের একটি শাখা দাবি করে আসছেন।তবে বাংকের শাখার যেমন দাবি আছে তেমনই ব্যাংকে বন্ধকি ঋণের কারণে জমা রাখা দলিল ঋণ পরিশোধের পর ফেরত পাওয়ার দাবি রয়েছে কৃষকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের। অনেকেই ঋণ শোধ করলেও সেসব দলিল ওখানে আটকে রাখায় ফেরত না পেয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন।
সোনাতলার মধুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অসীম কুমার জৈন নতুন এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সোনালী ব্যাংক হাঁসরাজ বন্দর শাখা নামে আরেকটি শাখা স্থাপনের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।করমজা এলাকার কৃষক শামছুল আলম জানান, ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করার পরেও জমির দলিলপত্র ফেরত পাওয়া যায়নি। দলিলটা খুব দরকার।এ ধরনের অভিযোগ এলাকার শতশত মানুষের।হরিখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ জানান, ১৯৭৯ সাল থেকে বিদ্যালয়ের দ্বিতল একটি ভবনের নিচ তলা ভাড়া নিয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ২০০৮ সাল পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যায়। এখন ব্যাংকের কাছে মাসিক ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে না আবার ওই ভবনে ক্লাস নেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। এ সমস্যার জরুরি নিষ্পত্তি দরকার।