অভ্যন্তরীণ নৌপথে লঞ্চ দুর্ঘটনা কমলেও অন্যান্য নৌদুর্ঘটনা থেমে নেই। যাত্রীবাহী ট্রলার বা ছোট নৌযানসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্যবাহী নৌযান দুর্ঘটনা সারা বছরই ঘটছে। চলতি বছরের গত ছয় মাসেই যাত্রী ও পণ্যবাহী মিলিয়ে মোট ১০৬টি ছোট-বড় নৌদুর্ঘটনায় ১৫৩ জন নিহত ও ৮৪ জন আহত হয়েছেন। এই সময়ে নিখোঁজ হয়েছেন আরো অন্তত ২২ জন।
শনিবার দুইটি বেসরকারি সংগঠন গ্রিন ক্লাব অব বাংলাদেশ (জিসিবি) এবং নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির যৌথ জরিপ প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ২৪টি জাতীয় ও ১০টি আঞ্চলিক দৈনিক এবং ৯টি অনলাইন নিউজপোর্টাল ও সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য-উপাত্ত সংগৃহিত হয়েছে বলে সংগঠন দুটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সারাদেশে বিভিন্ন নৌপথে এসব প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটে। আর দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির এই সংখ্যা গত বছরের তুলনায় বেশি। এ ছাড়া গত বছর বড় ধরনের লঞ্চ দুর্ঘটনা না ঘটলে এ বছর ইতোমধ্যে বুড়িগঙ্গায় লঞ্চডুবিতে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটেছে।
জরিপে বলা হয়েছে, এ বছরের জুন মাসে দেশে সবচেয়ে বেশি ২৬টি নৌদুর্ঘটনায় ৫৯ জন নিহত, ১৩ জন আহত ও ৫ জন নিখোঁজ হয়েছেন। এই মাসে উল্লেখযোগ্য দুর্ঘটনা হচ্ছে বুড়িগঙ্গায় বড় ধরনের লঞ্চডুবি। গত ২৯ জুন সকালে বড় লঞ্চ এমভি ময়ূর-২ এর ধাক্কায় যাত্রীবোঝাই ছোট লঞ্চ এমএল মর্নিং বার্ড নিমজ্জিত হয়ে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। সেখান থেকে এ পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে ৩৪টি মরদেহ।
এছাড়া জানুয়ারিতে ১৫টি দুর্ঘটনায় ১৮ জন নিহত ও ১৮ জন আহত; ফেব্রুয়ারিতে ১২টি দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত, ১৭ জন আহত ও ২ জন নিখোঁজ; মার্চে ২২টি দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত, ৩৫ জন আহত ও ৪ জন নিখোঁজ; এপ্রিলে ১৫টি দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত ও ১ জন নিখোঁজ এবং মে মাসে ১৬টি দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত, ১ জন আহত ও ১০ জন নিখোঁজ হয়েছেন।
জরিপে আরও বলা হয়েছে, গত বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত) নৌ দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৭৬ ও ৭১; যা চলতি বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেক কম।